logo

আজ হোয়াইটওয়াশই লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:16 Jul 2022, 12:55 AM

আজ হোয়াইটওয়াশই লক্ষ্য


অনেকটাই ছেলে খেলা করেই বাংলাদেশ দল সাবেক বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে প্রথম দুটি ম্যাচে জযলাভ করে। বাংলাদেশ দলের সাইড লাইনে থাকা খেলোয়াড়রা কেউ কেউ আজকের ম্যাচে খেলতে পারেন। তবে একমাত্র হোয়াইটওয়াশ করার প্রত্যয়েই মাঠে নামবে তামিম বাহিনী। আজ শনিবার বাংলাদেশ সময়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। আর এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সফর শেষ হবে। 

বুধবার রাতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এ নিয়ে পঞ্চমবার ৯ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ, চলতি বছর দ্বিতীয়বার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০৮ রান পেরিয়ে গেছে ১৭৬ বল বাকি থাকতে। গত রোববার বাংলাদেশে ঈদের দিনে বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়লাভ করে। ৩ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে রয়েছে ২-০ ব্যবধানে। আজ জিতলেই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করবে বাংলাদেশ ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে।  

সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজ সিরিজের শেষ ম্যাচকে তাই এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মঞ্চ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। যারা খুব বেশি সুযোগ পান না বা ম্যাচের বাইরে থাকেন, তাদেরকে এই ম্যাচে বাজিয়ে দেখা হবে, নিশ্চিত করে দিয়েছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রয়োজনে তামিম নিজেও একাদশের বাইরে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন নিজেই।

আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগ চালু হওয়ার পর ওয়ানডে ক্রিকেটে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এই সিরিজের অংশ কোনো ম্যাচকেই এখন আর হালকা ভাবে বা কম গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি ম্যাচই সেখানে পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজটি সুপার লিগের অংশ নয়। সেই সুযোগটিই নিতে চায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবশ্য এটির চর্চা খুব কম। সুপার লিগ চালুর আগেও নতুনদের পরখ করার ব্যাপার খুব একটা দেখা যায়নি।

একটা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব বেশি জয় পায়নি দল। তাই প্রতিটি ম্যাচেই সবকিছুর আগে ভাবনায় থাকত জয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষার আলোচনা হালে পানি পেত না।

তবে এখন ওয়ানডেতে দল বেশ ধারাবাহিক। সিরিজ জয়ের লক্ষ্যও পূরণ হয়েছে। তামিম বললেন, সুযোগটি এখন তৈরি হয়েছে। ‘এখন আমাদের সময় এসেছে ‘বেঞ্চ স্ট্রেংথ’ দেখে নেওয়ার। সাধারণত যখন পয়েন্টসের ব্যাপার থাকে, তখন সুযোগ থাকে না। কিন্তু এরকম সিরিজে যদি ২-০তে এগিয়ে যান, তখন যারা খেলেনি বা যাদেরকে নিয়ে আমরা অনেক দিন ধরে ঘুরছি, তাদের সুযোগ দেওয়া উচিত। এটির জন্য আমারও এক-দুই ম্যাচ মিস করতে হলে, ইটস ফাইন। কোনো সমস্যা নেই।”

‘বেঞ্চ স্ট্রেংথ অবশ্যই আমাদের পরীক্ষা করা উচিত। এই একটা জিনিস বাংলাদেশের ক্রিকেটে আমরা খুব কম করি। সব ম্যাচ তো আমরা অবশ্যই জিততেই চাই। তবে মাঝে-মধ্যে এটা করা খুব জরুরি, বিশেষ করে ওয়ানডেতে। কারণ, কে জানে, বড় সিরিজে গিয়ে দুজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার চোট পেতেই পারে।’

বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও বললেন একই ধরনের কথা।

‘শেষ ম্যাচটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক থেকে। এতদিনে এত গুরুত্বপূর্ণ সব ওয়ানডে সিরিজ খেলেছি, যেখানে পয়েন্ট খুব জরুরি। দলে পরিবর্তনের কথা খুব একটা ভাবনায় আনা যায়নি। তবে এখানে সুযোগ আছে পরখ করার। কারণ ২০২৩ বিশ্বকাপে তাকিয়ে কিছু ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার ব্যাপার আছে। এখানে পয়েন্টের কোনো ব্যাপার নেই। বাইরে থাকাদের পরখ করার দারুণ সুযোগ এটি।’

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রেকর্ড রান করে জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক বিজয় আজ শনিবার সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবেন, এটা নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায় এখন। সঙ্গে সুযোগ মিলতে পারে পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরীরও। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে একাদশে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেনও টিকে যেতে পারেন, ফিরতে পারেন এই ম্যাচে বাইরে থাকা পেসার তাসকিন আহমেদ। আরো কিছু কিছু জায়গায় পরিবর্তন করে একাদশ সাজাতে পারে বাংলাদেশ। 

অপরদিকে, সিরিজ হারিয়ে শেষ ম্যাচটি জিতে মুখ রক্ষা করাই লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তারাও একাদশে পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে তা বাংলাদেশের মতো বেঞ্চ স্ট্রেংথ পরখ করার জন্য নয়। ইজ্জত রক্ষার জন্য এই পরিবর্তন হতে পারে ক্যারিবিয় দলে। 

বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নুরুল হাসান সোহান, আনামুল হক বিজয়, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), শামারাহ ব্রুকস, ব্রান্ডন কিং, রোভম্যান পাওয়েল, কেসি কার্টি, কাইল মার্য়ার্স, গুদাকেশ মোতি, কিমো পল, শাই হোপ, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, এন্ডারসন ফিলিপ ও জেইডেন সিলেস।




© দিন পরিবর্তন