নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:05 Jul 2022, 04:17 PM
ঈদের সাত দিন চামড়াবাহী গাড়ি চলবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
কোরবানির সাতদিন পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখে এবং আন্তঃজেলায় কোনো চামড়াবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য পশু কোরবানির পর প্রয়োজনীয় লবণ যুক্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, লবণ যুক্ত করার কারণে কোনো চামড়া নষ্ট হবে না এবং সময় নিয়ে উপযুক্ত মূল্যে চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং চামড়ায় লবণযুক্ত করা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মসজিদগুলোতে এ বিষয়ে কোরবানিদাতাদের সচেতন করতে হবে।
তিনি বলেন, চামড়া ক্রয় নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক প্রয়োজনীয় টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছে। দেশে প্রয়োজনীয় লবণ মজুদ রয়েছে, লবণের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। হাটে কোরবানির পশুর হাসিলের সময় পশু ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় লবণ ক্রয় নিশ্চিত করবে সিটি করপোরেশন। মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এবার কোরবানির চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
টিপু মুনশি বলেন, দেশের চামড়া রপ্তানি বেড়েছে, আরও বাড়বে। সরকার দেশের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওয়েট ব্লু চামড়া কেস টু কেস ভিত্তিতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এতোদিন কোরবানির নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় লবণযুক্ত না করার কারণে অনেক সময় চামড়া নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকতো এবং বিক্রেতা কম দামে চামড়া বিক্রয় করতে বাধ্য হতেন। এবারে চামড়ায় নির্ধারিত সময়ে এবং প্রয়োজনীয় লবণ যুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনো চামড়া নষ্ট হবে না এবং বিক্রেতারা উপযুক্ত মূল্য পাবেন।
মন্ত্রী বলেন, চামড়ার গুণগত মান নিশ্চিত করতে যথাযথভাবে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে কোনো চামড়া নষ্ট না হয়। সরকার এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দেশের প্রচার মাধ্যমে টিভিসি প্রচার, লিফলেট বিতরণসহ পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এরআগে চামড়ার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার দর, চাহিদা, সরবরাহ, রপ্তানির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে লবণযুক্ত প্রতি বর্গ ফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৪৭-৫২ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা, খাসির চামড়া সর্বত্র ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া সর্বত্র ১২-১৪ টাকা ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে।
গতবছর লবণযুক্ত প্রতি বর্গ ফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৪০-৪৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৩-৩৭ টাকা, খাসির চামড়া সর্বত্র ১৫-১৭ টাকা এবং ছাগল ভেড়া ও মহিষের চামড়া সর্বত্র ১২-১৪ টাকা ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকতার হোসেন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ, বাংলাদেশ ফিনিশ লেদার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, হাইড অ্যান্ড স্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্তকর্তারা।
© দিন পরিবর্তন