নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:19 Sep 2022, 06:56 PM
গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করবে না রাশিয়া
ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। গত শনিবার রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেনে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করবে না রাশিয়া। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এ খবর জানিয়েছে। ইউক্রেনে চলা সামরিক অভিযানে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন, এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন পশ্চিমা নেতারা। সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মস্কোকে সতর্ক করে বাইডেন বলেছেন, এমন পদক্ষেপের ফলে যুদ্ধের প্রকৃতি বদলে যাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন কিছু আর ঘটেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনাগুলো পড়ুন। যেখানে সব লেখা আছে’।
রাশিয়ার পারমাণবিক নীতিতে পারমাণবিক অস্ত্র শুধু প্রতিরোধমূলক অস্ত্র হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। এগুলো ব্যবহারের চারটি ক্ষেত্রের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো : রাশিয়া বা মিত্রদের ভূখণ্ডে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, রাশিয়া বা মিত্রদের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বা গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার, রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা সামরিক স্থাপনায় হামলা, যার ফলে পারমাণবিক সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে আগ্রাসনের ফলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যদি হুমকির মুখে পড়ে। ইউক্রেনে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে কিনা এখন পর্যন্ত কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। তবে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পরপরই পুতিন তার পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তবে গত মাসেই রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শুইগো মন্তব্য করেছিলেন, সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগারের মূল উদ্দেশ্য হলে পারমাণবিক হামলা ঠেকানো। আর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনে শুধু প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। ইউক্রেনে দখলকৃত ইজিউম শহর থেকে পিছু হটলেও দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় আরেকটি শহরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। শনিবার সকাল থেকে রুশবাহিনী বাখমুত শহরের দিকে গুলিবর্ষণ করে এগোতে থাকে। সঙ্গে রয়েছে রকেট ও মর্টারশেল নিক্ষেপ। ধারণা করা হচ্ছে, শহরটির খুব কাছে পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এখবর জানিয়েছে। যুদ্ধের আগে বাখমুত শহরের জনসংখ্যা ছিল ৭০ হাজার। শহরটি খনিজ সম্পদে ভরপুর ডনবাস অঞ্চল দখলের লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জুলাই মাসের শুরুতে যখন রুশবাহিনী শিল্প শহর লিসিচানস্ক দখল ও লুহানস্কে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিল তখন থেকেই তাদের ধীরগতির আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় বাখমুত। গত সপ্তাহে উত্তর-পূর্বে রুশ সেনাদের পিছু হটার পরও বাখমুতে আক্রমণ জারি রয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনা ও কমান্ডাররা মনে করছেন, রুশবাহিনীর আক্রমণের জন্য বাখমুত ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ রুশ সেনারা পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ইউক্রেনের রসদ সরবাহ বিচ্ছিন্ন করতে চায়। রণক্ষেত্রে থেকে ইউক্রেনীয় সেনারা বলছেন, বাখমুতের আশেপাশে মোতায়েনকৃত রুশ সেনাদের বেশিরভাগ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের। এই সংস্থাটি ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ এবং সিরিয়া ও লিবিয়ায় যুদ্ধ করেছে।
© দিন পরিবর্তন