logo

চিনি ও চুনমুক্ত খাটি আখের গুড় পাওয়া যাচ্ছে কাপাসিয়াতে

নিজস্ব প্রতিনিধি

Published:08 Feb 2024, 03:38 PM

চিনি ও চুনমুক্ত খাটি আখের গুড় পাওয়া যাচ্ছে কাপাসিয়াতে


আল সাদি, গাজীপুর :
চলতি মৌসুমে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এবার মিলছে চিনি ও চুনমুক্ত খাটি আখের গুড়। প্রায় এক যুগ পরে এবার পাওয়া যাচ্ছে খাটি গুড়। এতে আখ মাড়াইয়ের কারখানাগুলোতে ভীড় জমিয়েছেন ক্রেতা।

কৃষকেরা জানায়, গুড়ের রং ফর্সা বানাতে আগে গুড়ের সাথে চিনি ও চুন মিশানো হতো। গত এক বছর আগেও এমনটি দেখা গেছে। এবার খাটি গুড় পাওয়া যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে, কাপাসিয়া উপজেলার আমরাইদ গ্রামে এক বিঘা জমির ওপর আখ মাড়াই কারখানা স্থাপন করেছেন স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম (৫০)। দশ জন শ্রমিক নিয়ে গুড় তৈরীর কারখানা করেছেন তিনি। এখানে নিজেরাই গুড় তৈরি করেন। ২০১০ সালে তিনি কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বলেন, আমি কখনোই চিনি চুন মিশিয়ে গুড় বানানোর কাজ করিনা। এবার কৃষকেরা চিনি মেশাতে আসেনা। চিনির দাম বেশি। তাছাড়া গুড়ে চিনি মিশাইলে জরিমানা হয়। এলাকার লোকজন পিঠা-পায়েস, সেমাই-সুজিসহ মিষ্টি খাবার তৈরিতে খাটি গুড়ের খোঁজে আসেন।

উপজেলার বারিষাব এলাকার নরসিংপুর গ্রামের আহমদ মিয়া জানান, আমি ২০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। প্রতিবেশি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে হেলাল মিয়া (৪০) জানান, ১০০ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। আখ মাড়াই কারখানায় আখ বিক্রি করবো।

একাধিত আখ মাড়াই কারখানায় দেখা গেছে, আখ মাড়াইয়ের শ্রমিকদের কেউ কেউ আখ মাড়াই করছে। কেও রস সংগ্রহ করছেন। কেউ বা আবার সে রস কড়াইয়ে ঢালছেন। রস ঘন হয় গেলে তা ডাইসে রাখা হচ্ছে। গুড় হয়ে গেলে সেটি আরেকজন ঘরে নিয়ে এসে টিনে ভরে রাখছেন। আখের রস থেকে বের হওয়া ময়লা আলাদা করছে।

কৃষক ইদ্রিস আলীর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম যন্ত্রের সাহায্যে আখ থেকে রস বের করছেন। তার ভাই কামাল মিয়া আখের রসের পাত্রে করে নিয়ে চুলায় দিচ্ছেন। কৃষক কালাম মিয়া (৪০) আখ কেটে নিয়ে এসেছেন গুড় তৈরির জন্য। গুড় বিক্রি করে সংসার চালায় তিনি। সে জানায়, পাইকারী দাম কেজিতে ১০০ টাকা, খুচরা দাম ১২০ টাকা। স্থানীয় রিপন মিয়া জানান, ত্রিশ কেজি গুড় নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি। আমরাইদ এর গুড় ভালো।

স্থানীয় শিক্ষক হারিছ মিয়া জানান, গুড়ে চিনি মেশানো বন্ধ হইছে, কিন্তু অনেকে ভারতীয় গুড় কিনে দেশি গুড়ের সাথে মিশিয়ে গুড় বানাচ্ছে।এসব থেকে সাবধান হওয়া দরকার। ডা. হান্নান মিয়া জানান, গুড় দিয়ে সেলাইন বানানো হয়। খাটি গুড় হলে ভালো হয়।

কাাপাসিয়া উপজেলা উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে ৭ থেকে ৮’শ কৃষক অমিত, টেনারী, ইশ্বরদী ২১ ও ইশ্বরদী ২৬ ও রংবিলাশ আখ চাষ করেছে।খাদ্য বিপনন বিভাগের তৎপরতায় এবং চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা চিনি মেশাতে পারছেনা।ভারতীয় গুড় মেশানো বিষয়টি তিনি জানেননা। কৃষি অফিসার সুমন কুমার বশাক জানান, গত নভেম্বর প্রথম দিকে এই মৌসুমের আখমাড়াই শুরু হয়।এ মৌসুমে উপজেলায় ১২০০ হেক্টর জমিতে আখ মাড়াই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়। ১১৬০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

 



© দিন পরিবর্তন