দিন পরিবর্তন ডেস্ক
Published:09 Apr 2021, 12:47 PM
ছুটিকে কাজে লাগানোর চমৎকার উপায়
শিক্ষার্থীদের জন্য সময়টা বেশ আনন্দ ও উল্লাসের। কারণ চলছে দীর্ঘ সময়ের ছুটি। উপভোগ করার মাঝেই ছুটির এই সময়টা কিন্ত আপনি (শিক্ষার্থী) এবং আপনার (অভিভাবক) সন্তানকে বিভিন্ন শেখা ও মানসিক বিকাশের জন্যও কাজে লাগাতে পারেন। পড়াশোনার সময় কিছুটা কমিয়ে, ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য বিভিন্ন অভ্যাস ও কাজে নিজেকে ঝালাই করে নেবার সময় করে দিতে পারেন। তো আর দেরি না করে, ছুটিকে কাজে লাগিয়ে সন্তানকে গড়ে তুলুন সৃজনশীলতায়। আর ছুটিকে কিভাবে কাজে লাগাতে পারেন, আজ জানব সেসব নিয়ে -
সৃজনশীলতা
আপনার ছোট্ট সোনামণির হাতে এক বাক্স রং তুলে দিন। নিজের মনের মতো করে ডিজাইন করুক কোনও টি-শার্ট বা বুক কভার অথবা কোনও কিছু দিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলুক কোনও মিউজিক ইন্সট্রুমেন্ট বা কোনও গেম। এতে ওদের কল্পনাশক্তি যেমন বাড়বে, তেমনই উন্নত হবে সৃজনশীলতাও।
স্বেচ্ছাসেবক
ছুটির সময়টা স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করার বা এনজিও সাথে কাজ করার শ্রেষ্ঠ সময়। অনেকের হয়তো ইচ্ছা থাকার পরও ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করার আশা পূর্ণ হয় না। তাই আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন আর দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অথবা স্বেচ্ছা শ্রমের যে কোন সামাজিক কাজে যোগ দিন। দেখবেন সারা জীবন বই পড়ে আপনি যা শিখতে পারেন নি সেই সকল বিষয় জানতে পারবেন এই সময়ে।
বই পড়ার অভ্যাস
বই পড়ার কোন নির্দিষ্ট গন্ডি নেই। বই যত পড়তে, তত জ্ঞান চক্ষু খুলবে। কোন ছবির বই হোক, কমিকস বা কোনও ম্যাগাজিন বা কোন গল্প-কবিতার বই। আপনার সন্তানকে সঙ্গে পড়ুন এবং ওরে পড়তে দিন। ওর পড়ার অভ্যাস ও পড়ার মাধ্যমে শেখার অভ্যাস তৈরি করুন। এতে ওর শব্দভান্ডারও উন্নত হবে।
পরিবারকে সময় দিন
এই পৃথিবীতে আপনাকে সব থেকে বেশি কে বা কারা ভালোবাসে? নিশ্চয় আপনার বাবা-মা, ভাই-বোন, আপনার পরিবার। আবার ঠিক একই ভাবে আপনার ভালোবাসা সব থেকে বেশি জমানো তাদের জন্য। তাহলে আর দেরি কেন, যদি পরিবারের সাথে থেকেই এতদিন পড়ালেখা করে থাকেন তাহলে এই অবসর সময়ে পরিবারের সবাইকে আর একটু বেশি সময় দিন। আর যদি পরিবার থেকে দূরে থেকে পড়ালেখা করে থাকেন তবে এক্ষুনি ব্যাগ গুছায়ে বাড়ির পথে পা বাঁড়ান। সবাই নিশ্চয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। বাড়িতে গিয়ে সাহায্য করুন বাবার বাইরের কাজে আর মায়ের ঘরের কাজে। আর ভাই-বোন অথবা পরিবারের অন্য সবাইকে নিয়ে ভালোবাসা আর আনন্দে মেতে থাকুন সারাক্ষণ।
রান্নাঘর
ছেলে বা মেয়ে- যেই হোক! আপনার লক্ষীসোনার হাতে তুলে দিন রান্নার চাবিকাঠি। সে নিজের মতো করে নিজের খাবার তৈরি করা শিখে ফেলুক । ওর সঙ্গে রান্না করুন যাতে রান্নাঘরে সময় কাটানো উপভোগ করে। বাজারে সঙ্গে নিয়ে যান। জিনিসপত্র, টাকা পয়সার হিসেব রাখতে শেখান। এতে ওর অঙ্কে মাথা আরও খুলবে।
অ্যাডভেঞ্চার
ভ্রমণ বিলাস নয়, ওকে নিয়ে যান পাহাড়ে ট্রেকিং বা রিভার ক্যাম্পিং, অথবা জঙ্গল সাফারিতে। পাথর কুড়নো, প্রজাপতি ধরার মতো অ্যাডভেঞ্চারে মেতে থাকুন বাচ্চার সঙ্গে। এতে ওর যেমন প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় ঘটবে, তেমনই যে কোনও
পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, সাহস, উদ্যমও তৈরি হবে।
কম্পিউটার প্রশিক্ষণ
বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার ছাড়া অসম্ভব। কারণ দৈনন্দিন কাজের বেশির ভাগই এখন অনালগ থেকে ডিজিটালে চলে গেছে। তাই ছুটির অবসরে আপনার সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দিন যেকোন একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। কারণ সরকারি ও বেসরকারি অফিসগুলোতে কম্পিউটার ছাড়া কোন কাজ হয় না। তাই যোগাযোগ করা যেতে পারে জেলা যুব উন্নয়ন কেন্দ্র বা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ যেকোন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারে।
ফিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং
‘ঘরে বসেই উপার্জন’ কথাটি আপনারা শুনে থাকবেন। তবে এটাকে শোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে একটু জানতে চেষ্টা করুন। আর আপনার সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দেন কোন একটি আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। আর ব্যবস্থা করে দেন ঘরে বসে উপার্জন করার মাধ্যম।
সাহিত্য চর্চা
সাহিত্য সবাই পছন্দ করে। অবশ্যই কোন কবিতা-গল্প-উপন্যাস পড়ে, একটু সময়ের জন্য হলেও নিজেকে কোথায় যেন হারিয়ে ফেলেছেন। আবার ভেবেছেন, লেখক কিভাবে লিখলো এসব। আজব ব্যাপার তো! আর ব্যাপারটা আজব না রেখে, আপনি যদি লিখতে পছন্দ করেন তাহলে এই ছুটির সময়ে লেখা শুরু করে দিন সেই লেখাগুলো; যেগুলো আপনার মাথায় উঁকি-ঝুঁকি মারছে অনেক দিন থেকে যা হতে পারে কোন বাস্তব কাহিনী অথবা কল্পকাহিনী।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে মজার কাজের মধ্যে একটি। এটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহজ এবং জরুরি একটি বিষয়। কাজেই অবসরে আপনার মানিক-রতনকে হয়ে যেতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইনার। যোগাযোগ করতে পারেন আশপাশের
কোন গ্রাফিক্স ডিজাইন কেন্দ্রে।
সিনেমা দেখুন এবং গান শুনুন
লম্বা সময় ক্লাস, নোট, শিট, প্রাইভেট, পরীক্ষা চলাকালীন সময় কত কত নতুন সিনেমা মুক্তি পেয়েছে আপনি জানেন? অথবা আপনি যে টিভি সিরিজ পছন্দ করেন তার কতোগুলো পর্ব মিস করে ফেলেছেন? দুঃখিত হবার কিছুই নাই। টরেন্ট বা এফটিপি সার্ভার থেকে ডাউনলোড করে নিন অথবা ইউটিউবে দেখে ফেলুন।
আর সময় করে বন্ধু-বান্ধব অথবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে দেখে আসুন প্রিয় কোন সিনেমা। আর গানের কথা না লিখলেও আপনি হয়তো শুনতে ভুল করবেন না। শুনতে থাকুন পছন্দের সব প্রিয় গান প্রান ভরে। এতে করে আপনার মন-মেজাজ ফ্রেশ থাকবে।
© দিন পরিবর্তন