logo

টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না অগ্নিদগ্ধ হালিমার

নিজস্ব প্রতিনিধি

Published:23 Jan 2024, 12:25 PM

টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না অগ্নিদগ্ধ হালিমার


শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের পুরাতন বাখরবা গ্রামের গৃহবধূ হালিমা খাতুন (২২)। রান্না করার সময় ওড়নায় আগুন লাগে। সেই আগুনে দগ্ধ হয় পুরো শরীর। ওই শরীর নিয়েই স্বামীর বাড়িতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। টাকার অভাবে তিনি উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

হালিমা খাতুন ওই গ্রামের জিছান হোসেনের স্ত্রী। স্বামী পেশায় রাজমিস্ত্রী। তাদের আড়াই বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

হালিমা খাতুনের মা স্বপ্না খাতুন জানান, ‘৭ মাস আগে সকালে হালিমা খাতুন লাকড়ির চুলায় রান্না করছিল। এ সময় হঠাৎ চুলা থেকে তার ওড়নায় আগুন লাগে। একপর্যায়ে তিনি রান্না ঘরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে এসে পানি দিয়ে আগুন নেভায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসা শেষে টাকা-পয়সা শেষ হওয়ার কারণে মেয়েকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।’

কান্না জড়িতকণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। নিজেদের কোনো বাড়ি-জমি নেই। বাড়ি করার জন্য তিন লাখ টাকা জমিয়েছিলাম তা সবই মেয়ের চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে। এখন প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার টাকার ওষুধ লাগছে। টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে না পারায় মেয়ের কোনো উন্নতি হচ্ছেনা। তাই তিনি সমাজের বৃত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।’

হালিমা খাতুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা নেওয়ার পরও পুরোপুরি সুস্থ হইনি। এখনো ক্ষতস্থানে যন্ত্রণা করে। গায়ে ফোসকা পড়েছে। সব সময় অস্বস্তি লাগছে। এই অসহ্য যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পেতে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। ’ তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ঢাকায় চিকিৎসা করাতে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমার পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা করানো আর সম্ভব না। সেজন্য আমি নিজেই তাদের অনুরোধ করে বাসায় নিয়ে যেতে বলেছিলাম। এখন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার ওষুধ প্রয়োজন।’

শারমিনের স্বামী জিছান হোসেন বলেন, ‘রাজমিস্ত্রির কাজ করে কোনোমতে ৬ সদস্যের সংসার চলে। এক বেলা খেলে আরেক বেলার চিন্তা করতে হয়। তার ওপর স্ত্রীর চিকিৎসা। এখন বাজার করব কী দিয়ে, চিকিৎসার খরচ জোগাব কী করে, চিন্তায় আছি।’

সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন বলেন, ‘ওই গৃহবধূর পরিবার আমার কাছে কিছু জানাননি। খোঁজ নিয়ে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।’

অবিরাম উন্নয়নে বাংলাদেশ সংগঠনের সভাপতি মো. উজ্জ্বল আলী বলেন, তার মতো অসহায় মানুষের পাশে সবসময় সহযোগিতা করে অবিরাম উন্নয়নে বাংলাদেশ। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তার পাশে থাকা হবে। তার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।



© দিন পরিবর্তন