নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:23 Jan 2024, 12:19 PM
টাঙ্গাইলে সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকেরা
হাফিজুর রহমান.টাঙ্গাইল
এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
সরজমিনে, মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে সবুজের মাঝে ফুটে আছে হলুদ সরিষা ফুল। শীতের হিমেল হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে সরিষার মৌ মৌ গন্ধের সুবাতাস। এসময় মৌমাছি মধু আহরণে ব্যস্ত সরিষার ফুল থেকে। ধান আবাদের পরে ফাঁকা জমিতে সরিষা চাষ করে দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলী জমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। ফলে দেশে অনেক পরিমান ভজ্য তেলের উৎপাদন বেড়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ, সার সহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার কারণে আগের চেয়ে ফলন বেড়েছে কয়েকগুন। ধান কাটার পরে সরিষা আবাদ করলে সরিষা গাছের সকল পাতা জমিতে পরে যায় পরে আবার ধান চাষের সময় সেই পাতা পচে সারের কাজ করে। এর ফলে জমির মাটি উর্বর হয়ে ধান চাষে সার কম লাগে। তাই কৃষি কে এগিয়ে নিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
এবছর মধুপুর উপজেলায় রেকর্ড পরিমান সরিষার চাষ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার প্রতিটি মাঠেই চোখে পড়ে দিগন্তজোড়া সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সেই হলুদ সরিষা ফুলের মাঝে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গিতে ক্যামেরায় দৃশ্য ধারণ করছেন শিশু-কিশোর সহ নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।
উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের দড়িহাতিল গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম, বেলায়েত হোসেন, আ. হামিদ জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি প্রণোদণা সহ সঠিক সময়ে এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শ পাওয়ার কারণে এবছর সরিষার আবাদ গতবারের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। প্রতিটি সরিষা গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল ও সরিষা ধানা বের হয়েছে। আকারেও বড় হয়েছে মনে হচ্ছে এবার সরিষার ফলন ভালো পাব। সময়মতো সরিষা তুলে বিক্রি করতে পারলে বাড়তি কিছু টাকা আসবে। এতে পুরোদমে ইরি- বোরো চাষ করতে পারব।
একই এলাকার অপর কৃষক শফিক মিয়া জানান, গত বছর আমার জমি পতিত ছিল সরিষার দাম ভালো থাকায় চলতি বছর আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো দাম নিয়ে বিক্রি করতে পারব। ওই টাকা দিয়েই আমি বোরো চাষ করতে পারব।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আল-মামুন রাসেল জানান, চলতি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে কৃষকদের সরিষা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-১৪, ১৫, ১৭, ১৮ বিনা - ৪, ৯, ১১ জাতের সরিষার চাষ সহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এ উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ২৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬থেকে ৭মন সরিষা ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ধরনের ক্ষতি না হলে এ উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
© দিন পরিবর্তন