নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:30 Jan 2024, 04:28 PM
তাড়াশে ট্রিপল মার্ডারকে ঘিরে রহস্য, উদঘাটনে মাঠে পুলিশ
সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বারোয়ারি বটতলা মহল্লায় একই পরিবারের ৩জনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এলাকার কালিচরণ সরকারের ছোট ছেলে বিকাশ সরকার (৪৫), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষি (১৫)।
নিহতের বড়ভাই প্রকাশ সরকার তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় বিষ্মিত এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ দাবী করেছে। এদিকে প্রাথমিক ভাবে ঘটনার কারন না জানা গেলেও পুলিশ সহ বিভিন্ন গোয়েন্দারা রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, তাড়াশ উপজেলা সদরের বায়োয়ারী বটতলা এরাকার ধনাঢ্য কৃষক বিকাশ, স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষি (১৫) এর ২দিন ধরে কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিলনা। পরে বাড়িতে গিয়ে কক্ষে তালা ঝুলোনো দেখে পুলিশকে জানানো হয়। মঙ্গলবার ভোর রাতে পুলিশ এসে বাড়ির তালা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে তাদের রক্ত মাখা লাশ পড়ে থাকতে দেখে।
মুহুর্তের মধ্যেই এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকা জুড়ে আতংক বিরাজ করে। ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সবার মাঝে। শোকে বিহবল স্বজনদের কান্নায় ভাড়ী হয়ে ওঠে এলাকার আকাশ বাতাস।
এ ব্যাপারে নিহত বিকাশ সরকারের ভাগনে লিপন সরকার জানান, পুরো পরিবারটিকে সন্ত্রাসীরা শেষ করে দিয়েছে। পুর্ব শত্রুতার জের ধরে এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটতে পারে। এতে আমাদের ধারনা, রাজশাহীর পুঠিয়াতে আমার এক বোনকে বিয়ে দিয়েছে বিকাশ মামা। তার স্বামী ও পরিবার আমার বোনকে মাঝে-মাঝে মারধর করে। ভাত-কাপড় দেয়না। এ ব্যাপারে মামার তত্বাবধানে দায়ের করা মামলায় একজন জেলখানায় আটক রয়েছে। হতে পারে তারা এজন্য তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। আমরা সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার চাই। দায়ীদের ফাঁসি চাই।
উপজেলা সদরে চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনায় হতভাগ এলাকাবাসীও এই হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারছেনা। এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের রজত চন্দ্র ঘোষ ও সভাপতি আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর আলম লাবু জানান, এই হত্যাকান্ড পুরো উপজেলাবাসীকে হতভাগ করেছে। আমরা বিষ্মিত, আতংকৃত। যেই এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ডের সাথে দায়ী থাকুক আমরা চাইবো দ্রুত তাদের আটক করা হোক। এজন্য হত্যাকারীদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে এর রায় ইতিহাস হয়ে থাকে।
বিষয়টি নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (ক্রাইম এন্ড অবস) মোঃ সামিউল আলম জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। প্রাথমিক ভাবে আমরা সব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছি। ইতি মধ্যেই আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে। দায়ী যেই হোক আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা তাদের খুঁজে বের করে আটক করবো।
এদিকে স্বজনদের ধারণা, রোববার রাত থেকে সোমবার কোনো একসময়ে এ হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে।
© দিন পরিবর্তন