logo

দর্শনার্থীতে জমজমাট কারুশিল্প মেলা, ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি

নিজস্ব প্রতিনিধি

Published:09 Feb 2024, 03:31 PM

দর্শনার্থীতে জমজমাট কারুশিল্প মেলা, ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি


সজীব হোসেন,সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ:
ছুটির দিনে জমজমাট হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলার ২৫তম দিন শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়। সন্ধ্যার পর আরও ঢল নামে। দোকানে দোকানে চলছে কেনাবেচা। এতে ব্যবসায়ীদের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটে উঠেছে।

 

গত (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার। মাসব্যাপী মেলা শুরু থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণে ছিল মুখর।

 

এদিকে লোকজ উৎসবের নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শনার্থীরা। দিন যত যাচ্ছে, লোকসমাগম ততই বাড়তে শুরু করেছে।

মেঘনা উপজেলা থেকে মেলায় ঘুরতে এসেছেন বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বাংলার নানা ঐতিহ্যবাহী জিনিস দেখে খুব ভালো লাগছে। সব স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেছি। আমার স্ত্রীর জন্য একটি জামদানি শাড়ি কিনেছি। আর কিছু সৌন্দর্যবর্ধক পণ্য কিনেছি। তবে আজ ছুটির দিন হওয়ার মেলায় অনেক লোকসমাগম হয়েছে। এ কারণে একটু বেশি ভিড় হয়েছে।

 

এর আগে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণে ‘ও-পেন্টি বায়োস্কোপ’ ও ‘ইচিং-বিচিং’ নামের দুটি গ্রামীণ হারিয়ে যাওয়া খেলায় অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।

 

এদিকে শেষ বিকালে মেলায় লোকজ উৎসবের নানা আয়োজন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া থেকে আসা ২০ জন লালন শিল্পী একক ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করেছেন। পাশাপাশি বাউলগান পরিবেশন করেছেন তারা।

 

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গাইড লেকচারার এ কে এম মুজাম্মিল হক বলেন, ‘আজ ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় অনেক লোকসমাগম হয়েছে। আর লোকজ উৎসবের আয়োজনে রয়েছে কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির লালনসংগীত। তাদের ২০ জন শিল্পী একক ও দলীয় লালনগান পরিবেশন করেন।’

 

আয়োজন সূত্রে জানা গেছে, মেলা উপলক্ষে ১০০ স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জামদানি শাড়ি, নকশিকাঁথাসহ সব ধরনের হস্তশিল্প এখানে রয়েছে। মেলায় উদ্যোক্তাদের ১০টি স্টলসহ মোট ১০০টি স্টল রয়েছে। এ ছাড়া মেলায় ৩২টি স্টলে ৬৪ জন কারুশিল্পী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে রাজশাহী জেলার শাকের হাঁড়ি, সোনারগাঁয়ের জামদানি শাড়ি, মৌলবীবাজারের শিতল পাটি ছিল উল্লেখ্যযোগ্য। আর লোকজ উৎসবের আয়োজন হিসেবে প্রতিদিন বিকাল থেকে একক পরিবেশনা ও দলীয় পরিবেশনা থাকবে। এক মাসব্যাপী এই অনষ্ঠান চলমান থাকবে।

 

হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন। আমরা মেলায় আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ পুরো ফাউন্ডেশনকে সিসিটিভির আওতায় রেখেছি। একদল স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বলে জানান, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এ.কে.এম আজাদ সরকার।

 

এছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম চলবে। মেলার জন্য অতিরিক্ত কোনও টিকিট কাটতে হবে না। শুধু প্রবেশ ফি দিয়ে মেলায় ঘুরতে পারবেন। এ ছাড়া বিকাল ৫টার পর থেকে কোনও প্রবেশ ফি নেই। মাসব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।



© দিন পরিবর্তন