logo

দুই প্রতিষ্ঠানে একই ব্যক্তি, আছে নাশকতা মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি

Published:10 Feb 2024, 04:52 PM

দুই প্রতিষ্ঠানে একই ব্যক্তি, আছে নাশকতা মামলা


নন্দীগ্রাম (বগুড়া) :
বগুড়ার নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষসহ তিন পদে নিয়োগে অর্ধকোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে গভর্ণিং বডির সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুল হাসান সবুজসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। বিধি বহির্ভূতভাবে কলেজের অধ্যক্ষ পদে সদ্য যোগদান করা মাহবুবুর রশিদ অরফে তোতা মিয়া আরেকটি কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। আদালতে মামলার পরও গোপনে সম্পন্ন হয়েছে কলেজের নিয়োগ কার্যক্রম। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভূক্ত দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত মাহবুবুর রশিদ নাশকতা মামলার আসামি।

থানা সুত্র জানায়, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রচারণাকালে পৌরসভার নামুইট এলাকায় গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মারপিট, ককটেল বিস্ফোরণসহ একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মাহবুবুর রশিদ জড়িত ছিলেন। তিনি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে নন্দীগ্রাম থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামি। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, মাহবুবুর রশিদ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সিহালীর পীরব ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ, চাকরি বিধি ভঙ্গ করাসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

নভেম্বর মাস থেকে বেতনের অর্ধেক টাকা কর্তন করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে গত ৯ নভেম্বর নোটিশ দেওয়া হয়। উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর ওই কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের আবেদন করেছিলেন। একারণে প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করা হয়। পীরব ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসিমা আকতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাহবুবুর রশিদকে অর্থ আত্মসাৎ ও নানা অনিয়মের কারণে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। সেই ব্যক্তি কিভাবে আরেকটি কলেজে নিয়োগ পায়? প্রশ্ন তার।

গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত চিঠিতে বলা হয়, উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর রশিদকে বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। পদ থেকে সরানোর পরও মাহবুবুর রশিদ কলেজের যৌথ ব্যাংক একাউন্ট থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করাসহ নানা অনিয়মে জড়ান।

অভিযোগ রয়েছে, মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে একবছরের জায়গায় আড়াই বছর ধরে অবৈধভাবে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা খাতুনের সঙ্গে গোপনে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কৌশলে গভর্ণিং বডির সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সবুজ। অবৈধ অধ্যক্ষের মাধ্যমে নির্বাচিত অবৈধ সভাপতির দায়িত্বে কলেজের অধ্যক্ষ, নৈশ প্রহরী ও পিয়ন পদে নিয়োগ কাযক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রম বন্ধ করতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গত ৫ অক্টোবর বগুড়ার আদালতে মামলা দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎসাহী সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহসীন আলী। মামলা ও বিধি তোয়াক্কা না করে কলেজের অধ্যক্ষসহ তিন পদে গোপনে অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে গভর্ণিং বডির সভাপতির বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়ম বহির্ভূতভাবে যোগদান করেন মাহবুবুর রশিদ। একই ব্যক্তি জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভূক্ত দুই কলেজে চাকরি করার বিষয়টি জেনে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়রা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এনিয়ে ক্ষোভ ও তর্ক-বিতর্ক চলছে। এ বিষয়ে মাহবুবুর রশিদ তোতার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি কামরুল হাসান সবুজ বলেন, নাশকতা মামলার ব্যাপারে তার জানা নেই। বিধি মেনেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। যোগাযোগ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদত হোসেন মন্তব্য করতে রাজি হননি।



© দিন পরিবর্তন