নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:12 Mar 2024, 05:30 PM
দেশ রূপান্তরের নকলা প্রতিনিধির মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের স্মারকলিপি
পঞ্চগড় :
দৈনিক দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা প্রতিনিধি শফিউজ্জামান রানার নি:শর্ত মুক্তি ও ঘটনার তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে পঞ্চগড়ের সাংবাদিকরা। মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড়ের সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম শহীদের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক মো.জহুরুল ইসলামের হাতে তুলে দেন তারা। স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগ তুলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড প্রদান করায় গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছে পঞ্চগড়ের সাংবাদিকরা।
এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণসহ অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করা হচ্ছে। ঘটনাটি অবাধ তথ্যপ্রবাহ, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার যখন জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। সেই সময়ে একজন সাংবাদিকের তথ্য চাওয়াকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করে ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নকলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি ও রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ হিসাবে সংবাদ ও সাংবাদিকতার মূলভিত্তিতে কুঠরাঘাতের শামিল।
শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নকলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও লজ্জাজনক। সরকারের দেওয়া আইনে তথ্য চাওয়াকে তারা (প্রশাসন) অপরাধ হিসাবে গণ্য করে, এ আইনের ব্যতয় ঘটিয়েছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও তথ্য প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল।
আর এই ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নজীরবিহীন নগ্ন হস্তক্ষেপ। তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে জেলে পাঠানো এবং তথ্য চাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বাসিয়ে সাংবাদিকের বিচার ঘটনা এদেশে এটাই প্রথম। ইউএনওর এমন হস্তক্ষেপ গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যম বিকাশে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ ওই সাংবাদিককে নিঃশর্ত মুক্তি, ক্ষতিপূরণসহ এই ইউএনওর দ্রুত অপসারণ এবং তার বিরুদ্ধ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আপনার আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। এজন্য আপনি ও আপনার সরকার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, এপিএ, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা, সিটিজের চার্টার অনুশীলন করার জন্য নির্দেশনা জারি করেছেন। নকলার ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসব অনুশীলন না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। কাজেই ওই সাংবাদিকের নিঃশর্ত মুক্তি ও দোষী কর্মকর্তাকে এ ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানাচ্ছি। এতে আপনার ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জল হবে বলে আমরা আশা করছি।
পঞ্চগড়ের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, স্মারকলিপিটি যথাস্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং সরকার বিষয়টির তদন্ত শুরু করছে।
© দিন পরিবর্তন