নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:11 Feb 2024, 02:51 PM
ধামরাইয়ে কুল চাষ করে লাভবান অনেকে
নবীন চৌধুরী, ধামরাই(ঢাকা):
সুস্বাদু ফল হিসেবে অনেকেই কুল(বরই) পছন্দ করেন। টক-মিষ্টি সব ধরনের কুল চাষ হয়। বর্তমানে কুলের বাজারদর ও ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন এর আবাদ বাড়ছে।
ধামরাই উপজেলার কয়েকটি কুল(বরই) বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার এক-একটি গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে কুল। চাষিরা বাগান থেকে কুল ছিঁড়ে ঝুড়িতে রাখছেন। পরে ওই কুল বিক্রির জন্য বাজারে নিচ্ছেন।
ধামরাইয়ে সানোড়া ইউনিয়নের আরিফুর ইসলাম বলেন, আমি কুল(বরই) চাষ করেছি যাদের পতিত জমি আছে আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলবো আপনারা উচ্চফলনশীল জাতের কুল চাষ করেন। কুল চাষে উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি।১০ শতক জমিতে আপেল কুল (বরই) চাষ করেছি। মিষ্ঠি আপেল কুলের(বরই) জাত।
আমতা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আমতা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য কুল (বরই)চাষী মনির হোসেন জানান, তিনি ইউটিউব দেখে এবং শায়খ সিরাজের প্রতিবেদন দেখে উৎসাহিত হয়ে নিজের বুদ্ধি দিয়ে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের আপেল কুল (বরই) উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। তিন বছর ধরে তিনি কুল( বরই) চাষ করছেন, প্রথম বছরেই মাত্র দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে তার ৭ বিঘা জমির আপেল কুলের (বরই) দাম উঠেছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা।
পূর্ব বাসনা গ্রামের আরেক কুলচাষি আলী হোসেন বলেন, কুলগাছ(বরই) লাগানোর সাত মাস পর থেকে গাছে ফুল আসতে শুরু হয়। ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেয়। আমি তিনবছর ধরে কুল (বরই) চাষ করি। আপেল কুল, কাশ্মীরি ও নারকেল কুল এই তিন জাতের কুল জমিতে আবাদ করছি। প্রথম বছর উৎপাদন খরচ লাগলেও পরের বছর হতে পরিচর্যা আর সামান্য জৈব সারের ব্যবহার করলেই হয়।
বাণিজ্যিকভাবে ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় উচ্চফলনশীল জাতের কুল চাষ হয়েছে। বাজারে বল সুন্দরী, আপেলকুল, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী ও টক-মিষ্টি কুলের(বরই) ব্যাপক চাহিদা থাকায় ছোট বড় অনেক বাগান হয়েছে। প্রতি বিঘা কুল (বরই) বাগানে প্রতিবছর ৩০ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয় এবং বিক্রি হয় প্রায় এক লাখ টাকা। লাভজনক হওয়ায় কুল(বরই) চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন ধামরাইয়ের শিক্ষিত ও বেকার যুবকেরা।
এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিসার আরিফুর রহমান জানান, এই উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল(বরই) চাষ হয়ে থাকে, মৌসুমি আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার ফলন বেশি হয়েছে, উপজেলা ঢাকার পার্শবর্তী হওয়ায় চাষীরা বাজার মূল্যটা বেশি পাচ্ছে। আর কুল চাষে কুলের পোকা- মাকড়ের আক্রমণ কম হয়, কুল চাষের পর পরই যদি তাদের ব্রান্স গুলা কেটে দেওয়া যায়, পরর্বতী সময় নতুন ব্রান্সে যেকুল আসে সেখানে রোগ ও পোকা- মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। এজন্যই বাণিজ্যিক ভাবে কুল( বরই) চাষের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
© দিন পরিবর্তন