নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:06 Feb 2024, 11:30 AM
পূর্বধলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে গরুর বসবাস
মোঃ শফিকুল ইসলাম খান, পূর্বধলা(নেত্রকোনা) :
নেত্রকোনার পূর্বধলায় ১১টি ইউনিয়নে ১২টি আবাসনে ১২৭টি ঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। জমি আছে, ঘর নেই- এমন মানুষের জন্য ২ কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা টিনের ঘর করে দেয়ার প্রকল্প ছিল এটি।
যা ইতিমধ্যে উপকারভূগীদের মাঝে প্রদান করে পূর্বধলা উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নে’র ধলাযাত্রা বাড়ি আবাসনে নির্মিত ১২টি ঘর গরিব-দুঃখী মানুষ নয়, বসবাস করছে গরু-ছাগল। কিন্তু বেশির ভাগ ঘরের বরাদ্দ ছিল বৃত্তবানদের জন্য। আশ্রায়নে’র পাশে এবং ঘরের ভিতরে রয়েছে বনের খড় ও ময়লা আবর্জনা ও সামনে খড়ের গাদা মানুষে’র কোনো বসবাস নেই।
পাশের বাড়ির আমিনা নামের একজনের গরু-ছাগল এখানে রাখেন এবং সামনে খড়ের গাদাও তিনি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন তার নিজের কোনো ঘর নেই। সরেজমিনে পরিদর্শন কালে স্থানীয়রা জানান যারা ঘরের নামের তালিকা করেছেন ভালো করে বাড়ির খোঁজ খবর না নিয়ে তালিকা করেছেন। তারা অনেকেই ধনী ও তাদের থাকার মতো ঘর ও জমি আছে।
এতে সরকারের বিশাল একটি উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পথে। অথচ গৃহহীন গরিব-দুঃখী অনেক মানুষ রাস্তায় থাকলেও সরকারি ঘর তাদের ভাগ্যে জোটেনি। আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ১২টি ঘরের ১২ টিতেই সুবিধাভোগীরা বসবাস করছেন না, তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে ১০টি ঘর। তালাবদ্ধ ঘরগুলোর মালিকরা এখানে বসবাস করেন না বলে জানান প্রকল্পের আশপাশের বাসিন্দারা। ২ টি ঘরে’র একটিতে থাকেন আনোয়ারা নামের একজন। তার নামে কোনো ঘর বরাদ্দ নেই তবে দাবি করেছেন সে বরাদ্দপ্রাপ্ত মোহম্মদ আলী খান এর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন।
মোহম্মদ আলী খান এর খোঁজ নিয়ে তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। নার্গিস নামে একজন থাকেন অন্য একটি ঘরে তিনি বলেন, আগের উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজনকে পরিবর্তন করে আমার নামে দলিল করে দিয়েছেন। আবার দেখা যায় তার ঘর বাদে কোনো ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, শুরু থেকেই এসব ঘরে মানুষ থাকে না। ঘর বরাদ্দ নিয়ে তারা পূর্বের বাড়িতেই থাকেন। তাদের অনেকের আগে থেকেই ঘর-বাড়ি আছে সেখানেই তারা বসবাস করছেন।
প্রকল্পের সরকারী ঘর বরাদ্দ নিয়েই ঘরগুলি তারা তালাবদ্ধ করে রেখেছেন, এখন শোনা যাচ্ছে গ্রাহক পেলে এই স্ব-স্ব মালিক গোপনে সরকারী ঘর বিক্রি করবেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, বাড়ি-ঘর এবং জমি আছে এমন লোকজন টাকার বিনিময়ে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে এই ঘর গুলো বরাদ্দ নিয়েছেন।
কিন্তু বিক্রি করার সুযোগ না থাকায় এভাবে তালা বদ্ধ করে রেখেছে মালিকরা। এ দিকে ছুছাউড়া প্রকল্প পরিদর্শনে দেখা যায়, এখানে ৫ জনকে পরিবর্তন করে ১৮টি ঘরে লোকজন বাস করছে একটি ঘরে বরাদ্দ পাওয়ার পরও কেউ না থাকায় এখনো খালি রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খবিরুল আহসান বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা যাচাই সাপেক্ষে পর্যায় ক্রমে গৃহহীন ও ভুমিহীনকে মালিকানা হস্তান্তর করা হবে।
© দিন পরিবর্তন