নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:12 Feb 2024, 04:20 PM
বঙ্গোপসাগরে র্যাব ৭ অভিযানে অস্ত্রসহ ৩০ জলদস্যু আটক
শংকর কান্তি দাশ, চট্টগ্রামে :
আজ চট্টগ্রাম পতেঙ্গা ১৫ নং ঘাটে আগ্নেয় অস্ত্রসহ ৩০ জলদস্যু আটকের ব্যাপারে র্যাব-৭ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ,চট্টগ্রাম র্যাবের অধিনায়ক লে: কর্ণেল মোঃ মাহাবুব আলম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারেন চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের, ভোলা ও বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যু বাহিনী কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর সম্প্রতি তারা আবারও পূর্বের ন্যায় সাগরে জেলেদের উপর অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবাজি এবং অপহরণসহ সকল প্রকার অন্যায় কাজ পরিচালনা করছে।
ভুক্তভোগীদের এরুপ অভিযোগের বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম মানবিকতার সহিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে উল্লেখিত এলাকায় ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ থেকে অদ্য ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের স্থল ও সাগর পথে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের আভিযানিক দল দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে ৩০ জলদস্য আটক সহ বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ,গোলাবারুদ ও গণডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ০২টি ট্রলার জব্দ করা হয়
তিনি আরো বলেন বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যু বাহিনীদের আক্রমণে সাগরে জেলেদের উপর অমানবিক অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবাজি, অপহরণ, প্রাণ নাশের হুমকি সহ হত্যার মত জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। এসব ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের দাপটে তটস্থ জেলেরা। র্যাবের উপর্যপুরি অভিযানের এক পর্যায়ে সশস্ত্র জলদস্যুরা গত ২০১৮ এবং ২০২২ সালে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাদের তথাকথিত গডফাদাররা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায়।
আত্মসমর্পণের পর সাগরে ডাকাতি কিছুদিন বন্ধ থাকলেও তথাকথিত গডফাদাররা নতুন ডাকাত সদস্য রিক্রুট করে পুনরায় জলদস্যু গ্রুপ তৈরী করে। উক্ত তথাকথিত গডফাদারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন- শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিয়ে নিজেদের ট্রলার নিয়ে অন্য যেকোনো কোম্পানির বোট ডাকাতি করে মাঝিমাল্লাদের বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নামিয়ে দিয়ে জলদস্যুরা লুটকৃত কোম্পানির বোট দিয়ে ডাকাতি চালিয়ে যায় জলদস্যুরা। যাতে তথাকথিত গডফাদারদের কেউ চিহ্নিত করতে না পারে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে স্বীকার করে যে, তারা কয়েকটি সংঘবদ্ধ চিহ্নিত শীর্ষ জলদস্য ও ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকার সংঘবদ্ধ জলদস্যু ঘটনায় সম্পৃক্ত সক্রিয় সদস্য। এছাড়াও এই দল গুলো দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী থানা এলাকাসহ সাগর পথে বিভিন্ন চ্যানেলে ডাকাতি' করে আসছে।
উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেও মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিষয়োক্ত অপরাধের কারনে তাদের প্রত্যেকের নামে অসংখ্য মামলার তথ্য পাওয়া যায়। আটক ৩০ জন জলদস্যু তিনটি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত, তিনটি গ্রুপের প্রধান হলেন করিম মাঝি, ইউসুপ মাঝি, শাহেদ মাঝি, গণ ডাকাতে ব্যবহারিত ট্রলার দুটির মালিক করিম মাঝি ও ইউসুফ মাঝি । ১০ থেকে ১২ দিনের জন্য বের হয়ে ১৫ থেকে ২০ টি মাছ ধরা ট্রলার ডাকাতির পরিকল্পনা করেন তারা। গ্রেফতারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত আগ্নেআস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সরঞ্জামাদি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রকিয়াধীন।
© দিন পরিবর্তন