নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:23 Jan 2024, 02:52 PM
বাঁশখালীতে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, হুমকির মুখে পরিবেশ
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্বিচারে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় সন্ধ্যা হলেই পাহাড়ে শুরু হয় নির্যাতন। সংঘবদ্ধ পাহাড় খেকোরা প্রশাসনের নজর এড়াতে সন্ধ্যা থেকে রাতভর পাহাড়ের মাটি কাটে। স্কেভেটর দিয়ে এসব মাটি কেটে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, জমি ও পুকুর ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটভাটায় ইট তৈরিতেও পাহাড়ের এই মাটি ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এভাবে পাহাড় কাটায় জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঁশখালীর চাম্বল ইউপির বড় বিল ও ছোট বিল, বৈলছড়ি ইউপির পূর্ব বৈলছড়ি ও পূর্ব চেচুরিয়া ধুইল্যাঝিরি, সরল ইউপির পাইরাং, পুঁইছড়ি ইউপি, পৌরসভার উত্তর জলদীসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে। উঁচুনিচু এসব পাহাড়ি এলাকায় যাতায়াতের রাস্তা সংকীর্ণ হলেও পাহাড় কেটে সেখানে ট্রাক, মিনি ট্রাক চলাচলের উপযোগী রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সন্ধ্যার পরেই স্কেভেটর দিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে ট্রাকে করে তা লোকালয়ে নিয়ে আসা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাহাড় কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া এই চক্রটি সংঘবদ্ধ। পাহাড় কাটা শুরু করলে প্রশাসনের আশেপাশে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্পটে তাদের লোকজন পাহারায় থাকেন। তাই প্রশাসন অভিযানে বের হলেই তারা সটকে পড়েন। যার কারণে অভিযান করেও এসব পাহাড় খেকোদের সহজে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এই চক্রটি পাহাড় নিধন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আবার প্রশাসনের একটি পক্ষের সাথে এই পাহাড় খেকোর যোগসাজশ রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল খালেক পাটোয়ারী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সক্রিয় ভূমিকা না রাখলে এসব অপরাধ দমন করা কঠিন। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান করা হলেও স্পটে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। এরপরেও প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এব্যাপারে সজাগ না হলে তাহলে তা রোধ করা কঠিন হবে। এবিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সবার সাথে আলোচনা করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
© দিন পরিবর্তন