নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:17 Jan 2024, 07:11 PM
রমজানে ন্যায্যমূল্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বিক্রির পরিকল্পনা
দ্রব্যমূল্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান। এমন পরিস্থিতিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে কিছু স্বস্তি দিতে রমজানকে সামনে রেখে ন্যায্যমূল্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বিক্রির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
প্রায় বছর দয়েক ধরেই নিতপণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ে অস্থিরতা চলছে দেশে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার গত বছর আলু, ডিমসহ কয়েকটি পণ্যের দরও বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি বাজারে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও দামে লাগাম টানা যায়নি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর নতুন মন্ত্রীরাও পণ্যের দাম মানুষের নাগালে আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে নতুন মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, “উৎপাদন ও মজুদ থাকার পরও তুনামূলক বিচারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এর কারণগুলো প্রধানমন্ত্রী নিজেই খতিয়ে দেখছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়েও তিনি মতবিনিময় করবেন।
“দেশে পর্যাপ্ত ডিমের উৎপাদন আছে, মাছের উৎপাদনও যথেষ্ট আছে, সুতরাং এগুলো ঠিক কি কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না, সেটি খতিয়ে দেখার বিয়ষটি মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে।"
মন্ত্রী বলেন, “এ থেকে উত্তরণে আগামী রমজানকে সামনে রেখে ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, তেল দেওয়ার মতো করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষত বস্তিনির্ভর এলাকা, দরিদ্রতর মানুষের বসবাসের জায়গায় ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে বিক্রয়ের পরিকল্পনা করেছে।
“বাজারের চেয়ে কমমূল্যে এসব জায়গায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম পাওয়া যাবে। তবে আমাদের সামর্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সব মানুষকেই ন্যায্যমূল্যে মাছ, মাংস আর ডিম দেওয়া সম্ভব হবে না। যাদের ক্রয়ক্ষমতা আছে তাদের এভাবে দেওয়ার পরিকল্পনা নেই।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর চেয়ে বেশি দূরে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য। আমাদের অবস্থান আরও উন্নততর জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
“দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য ডেইরি খাতে আরও কিছু কাজ করা প্রয়োজন। এ বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় আছে। মা ইলিশ এবং বাচ্চা ইলিশ (জাটকা) ধরার প্রবণতা বন্ধে একটা নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা নিষেধ থাকে, যার ফলে আমরা সুফল পাই, এটি চলমান রাখা হবে। জেলেদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে এর পরিমাণ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে।”
এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিদেশ থেকে যেসব সহায়ক কাঁচামাল, ওষুধ, ফিড আমদানি করতে হয়, সেসবের মূল্য বৃদ্ধি কেন হয়, দামের তারতম্য কী হয়, সে বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত যেহেতু মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, তাই এ খাতে কাঁচামালসহ অন্যান্য কিছু আমদানিকে যাতে আলাদা বিবেচনা করা যায় সে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আনা হবে।”
এ খাতের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে জড়িত সিন্ডিকেট বন্ধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সিন্ডিকেটকে কোনো ধরণের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
আইনগত কাঠামোর মধ্যে এদের একটা ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি এদের বিরুদ্ধে একটা সামাজিক ক্যাম্পেইনও তৈরি করতে হবে।
সিন্ডিকেটের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স। এটি কোন জায়গায় কিভাবে হয় সেটি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
© দিন পরিবর্তন