নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:07 Feb 2024, 03:06 PM
শ্রীপুরে বিষমুক্ত কুল চাষে আগ্রহ,দামে খুশি চাষি
শ্রীপুর(গাজীপুর):
নিভৃত পল্লির সবুজ প্রকৃতির ভেতর বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে কুল বাগান। পাকা সড়ক থেকে হাঁটাপথে কিছুটা এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে কাঠ-বাঁশের তৈরি ছোট্ট ফটক।ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা মেলে সারি সারি গাছ। গাছের নিচ থেকে উপর পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুুলছে শুধু বল সুন্দরী কুল।
দেখতে ঠিক আপেলের মতো,খেতেও সুস্বাদু। মিষ্টি ও সুস্বাদু এ জাতের আপেল কুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। ফলে গাজীপুরের শ্রীপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষমুক্ত এই কুলের চাষাবাদ। এই কুল চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর পশ্চিম পাড়া গ্রামের চার উদ্যোগতা। তাঁদের এমন সাফল্যে সারা ফেলেছে এলাকায়। প্রতিদিন তার বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছে। তার এ সাফল্য দেখে অন্য বেকার যুবকরাও ঝুঁকছেন কুল চাষে।
ইতিমধ্যে তাঁরা বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। বলসুন্দরী কুল চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন তারা। চার উদ্যোক্তা মিলে সাতখামাইর পশ্চিম পাড়া এলাকায় গড়ে তোলেন কুল বাগান। চার বছর আগে আট বিঘা জায়গা ১০ বছরের জন্য ইজারা নেন। এরপর সেখানে দেড় বিঘা এলাকায় দুই জাতের কমলার চারা রোপণ করেন। মোট জমির বাকি অংশে কুল চাষ করেন।এ মৌসুমে তাদের বাগানে সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। বাগানে রয়েছে কাশ্মিরী আপেল কুল, বাওকুল, বলসুন্দরী ও ভরতসুন্দরী নামে চার জাতের কুল ।চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ লাখ টাকার বরই বিক্রির আশা করছেন ।
বাগানের উদ্যোক্তাদের একজন মো.ফারুক আহমেদ বলেন, বাগানে আশানুরূপ ফলন এসেছে। বাগানের বয়স বাড়লে আরও বেশি ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । শের-ই-বাংলা কৃষি ইউনিভার্সিটির নার্সারি থেকে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী ও অস্ট্রেলিয়ান আপেল কুল জাতের বরইয়ের চারা এনে রোপণ করি। বর্তমানে আমার বাগানের সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে সাড়ে তিন শ বরই গাছ রয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি বরই পাইকারি ১০০ টাকা এবং খুচরা ১৩০ টাকা করে বিক্রি করি।
বাগানে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে, তাতে শেষ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারব ইনশাআল্লাহ। বাগানের আরেক উদ্যোক্তা আবদুল মতিন জানান, বাগানের বয়স ৪ বছর হলেও এ বছর হলো ভালো ফলন হয়েছে। আমাদের বরই বাগানে চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। তাদের দৈনিক মজুরি ৭০০ টাকা। এ ছাড়া কীটনাশক, সার ও সেচ খরচসহ সব মিলিয়ে বাগানে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে মৌসুম শেষে ১০ লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারলে লাভ হবে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা।আগামীতে বাগানের জমির পরিমাণ আরও বাড়ানোর ইচ্ছা রয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন,উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হয়েছে ।চার উদ্যোগতা আমাদের পরামর্শ নিয়ে উন্নত জাতের বলসুন্দরী বরই বাগান করেছেন। এ বছর তার বাগানে সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। বাগানটি দেখে অনেকেই বাগান তৈরির জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন।আমরা নিয়মিত তার বাগান পরিদর্শনসহ খোঁজ-খবর নিচ্ছি। একই সঙ্গে কোনো সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় পরামর্শের মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করি।
© দিন পরিবর্তন