logo

সীমান্তের ওপারে ত্রিমুখী সংঘাতের ভয় এপারে

নিজস্ব প্রতিনিধি

Published:31 Jan 2024, 05:16 PM

সীমান্তের ওপারে ত্রিমুখী সংঘাতের ভয় এপারে


মো.আবুল বাশার নয়ন, বান্দরবান :
বাংলাদেশ-মায়ানমার দুদেশের সীমানা চিহ্নিত হয়েছে ছোট্ট একটি ছড়া, যেটি তুমব্রু খাল নামে পরিচিত। আর নো ম্যান্স ল্যান্ড পার হয়ে কাটাতার দুদেশকে ভাগ করেছে। সেই কাটাতারের ওপারে দূর থেকে চোখে পড়ে সেদেশের বিদ্রোহী বা স্বাধীনতাকামী দলের সদস্যদের সক্রিয় তৎপরতা। আর এপারের সীমানা পাহারায় টহল দিচ্ছে সীমান্তরক্ষি বাহিনী বিজিবি।

এমন দৃশ্য বলে দেয় দুদেশের সীমান্ত পরিস্থিতির চিত্র। এই সীমান্ত এলাকায় দিনে কিছুটা কম থাকলেও রাতের আধারে বাড়ছে ব্যাপক গুলাগুলি। সবশেষ গতরাতে বিকট শব্দে কেপে উঠেছে তুমব্রু-ঘুমধুম এলাকা। অনেকে রাতে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ভোরে ফিরেছে বাড়িতে। সীমান্তের এমন ভয়ংকর উত্তেজনায় শিশু ও বয়ষ্কদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।

তবে অনেকে গোলার এমন শব্দের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন। মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মায়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের ওপারে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। মিয়ানমার বাহিনী ও স্বাধীনতাকামী গ্রুপের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে আবারো ওপার থেকে মর্টারশেল তুমব্রু কোণারপাড়ায় এবং পশ্চিমকুল এলাকায় মর্টারশেল সদৃশ্য (আরএম) এসে পড়েছে।

তবে মাটিতে পড়ায় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এপারে। পরিস্থিতি মোকাবেলা ও সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে ব্যাপক তৎপর রয়েছে সীমান্ত রক্ষি বাহিনী বিজিবি। এদিকে চলমান পরিস্থিতি সরেজমিনে ঘুরে দেখেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তুমব্রু এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, গতকাল দিনের বেলা কিছুটা শান্ত থাকলেও রাতে সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গুলাগুলির শব্দ ভেসে আসে। বুধবার সকালে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোণারপাড়ায় একটি বসতবাড়ির সামনে এবং পশ্চিমকুল এলাকায় জমির মাটিতে পড়ে থাকা দুটি মর্টারশেল দেখতে পায় স্থানীয়রা।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ। এমন বুধবার সকালে এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যান জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। তাঁরা সকালে ঘুমধুম ইউনিয়নে নির্মাণাধীন রোহিঙ্গা ট্রানজিট পয়েন্ট, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ করেছেন।

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, এপারের পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। এই পর্যন্ত সীমান্তে বেশ কয়েকটি মর্টারশেল বিষ্ফোরণের খবর রয়েছে। এখন আতংক হওয়ার কিছু নেই। সীমান্তে বিজিবি তৎপর রয়েছে। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর বিরাপত্তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। প্রয়োজন পড়লে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে পরীক্ষা কেন্দ্র। মানুষ যাতে আতংকিত না হয় সেজন্য এলাকায় জনপ্রতিনিধিরাও কাজ করছেন।

বান্দরবান পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন বলেন, সীমান্তে বিজিবি, পুলিশসহ আমাদের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ওপারে কিছু মর্টারশেলের শব্দ শুনা গেছে। তবে এলাকার মানুষকে আমরা আশ্বস্থ করতে চাই, আইন শৃংখলা বাহিনী জনগণের সুরক্ষার জন্য সবরকমের প্রস্তুতি রয়েছে। পরিদর্শণকালে বান্দরবান পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

 



© দিন পরিবর্তন