নিজস্ব প্রতিনিধি
Published:25 Oct 2023, 03:59 PM
২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন , চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আগামী ২৮ অক্টোবর
উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এ দিন দেশের প্রথম টানেল উদ্বোধনের পাশাপাশি আরও ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৮ অক্টোবর (শনিবার) সকাল ১০ টায় নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের নামফলক উন্মোচনের পর অপর প্রান্তে কাফকো কলোনি সংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ জনসভা হবে। সেখানে ১০ লাখ মানুষের জনসমাগম ঘটাতে তৎপরতা শুরু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। জনসভার জন্য নৌকার আদলে প্রস্তুত কারা হচ্ছে বিশাল মঞ্চ।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে টানেলের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা প্রান্তে চলছে সাজসজ্জার কাজ। সংস্কারের পাশাপাশি রঙ করা হচ্ছে সড়কগুলো। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার-ব্যানারে চেয়ে গেছে পুরো এলাকা ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘ দক্ষিণ এশিয়া তথা দেশের প্রথম টানেল নির্মাণের মধ্যে কর্ণফুলী-আনোয়ারা আরেকটি শহরে রূপ নিয়েছে। আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর করেছে টানেল। মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিটে টানেল পাড়ি দেওয়া যাবে। টানেলকে ঘিরে আনোয়ারায় গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা। আসছে বিদেশি বিনিয়োগও। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এসব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছার কারণেই।’
তিনি বলেন , স্বপ্নের এই টানেল উদ্বোধন করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে আসছেন। ওইদিন টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে কেইপিজেড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাড়ে ৯ লাখ বর্গফুটের এই মাঠে ১০ লাখ লোকের জনসমাগম ঘটাতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকেও নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেবেন।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ছাড়া ও চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ টাওয়ার, রাঙ্গুনিয়া ও আনোয়ারা জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, পটিয়ায় শেখ কামাল অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হল, রাউজানে শেখ কামাল কমপ্লেক্স, আগ্রাবাদে সিজিএস কলোনিতে ৯টি বহুতল আবাসিক ভবন, বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, শিকলবাহা খালের ওপর পিসি গার্ডার ব্রিজ, ডিসি পার্ক, হাজার বছরের নৌকা জাদুঘর, ১৯১টি ইউনিয়নে খেলার মাঠ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস ও পর্যটক বাস, রিভার ক্রুজ ও ফুল ডে ট্যুর সম্বলিত পর্যটন সেবা, বার্ডস পার্ক ও চিড়িয়াখানার আধুনিকীকরণ প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করবেন। এ ছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণ, বিমানবন্দর থেকে বঙ্গবন্ধু টানেল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সড়ক এবং সিমেন্স হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, প্রকল্পগুলোর অনেকগুলোর কাজই প্রায় শেষ। যেগুলো হয়নি, সেগুলো আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান।
চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার চট্টগ্রাম পতেঙ্গা ও আনোয়ারাকে যুক্ত করেছে এ টানেল। যার ফলে নদীর তলদেশ দিয়ে কম সময়ে যাতায়াত সুবিধা পাবে দুটি আলাদা শহর। দুটি টিউব ও চার লেনের সড়কে নদীর তলদেশ দিয়ে পাঁচ মিনিটে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে যাওয়া যাবে আনোয়ারায়। অন্যদিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব কমে আসবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার ও সময় প্রায় এক ঘণ্টা কমিয়ে আনছে এ টানেল।
© দিন পরিবর্তন