ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে পিছিয়ে পড়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। প্রথম দিন বাংলাদেশ ব্যাটারদের ব্যর্থতা, আর দ্বিতীয় দিন বোলাররা জ¦লে উঠলেও, সেটি ধরে রাখতে না পারার খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের এমন পারফরমেন্সে হতাশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো।
তিনি জানান, বাংলাদেশ দল কিছু মৌলিক ভুল করেছে। যা খুবই হতাশাজনক।
ড্যারেন স্যামি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই ২৩৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় দিন বোলারদের নৈপুন্যে ৩২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটিয়েছিলো টাইগার বোলাররা। এতে দ্রুত প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দিয়ে লিডের স্বপ্ন দেখছিলো বাংলাদেশ।
কিন্তু কাইল মায়ার্স ও জার্মেই ব্ল্যাকউডের ব্যাটিং দৃঢ়তায়, লিড পায় বাংলাদেশ। আর দিন শেষে মায়ার্সের অনবদ্য ১২৬ রানের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড ১শ ছাড়ায়।
এমন অবস্থায় ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষে কথা বলেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে গল্পটা টেস্ট ক্রিকেটের মতোই। আমরা একটা সেশন ভালো খেলেছি, আরেক সেশন খুবই বাজে। হয়তো ছেলেরা অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল। টানা যথেষ্ট পরিমাণে আঁটসাঁট বোলিং করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারিনি আমরা, যা পেরেছিলাম প্রথম সেশনেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম সেশনে আমরা ভালো বল করেছি। কিন্তু লাঞ্চের পর সেটা ধরে রাখতে পারিনি। উইকেটের জন্য বোলিং করতে গিয়ে কিছু আলগা বল করেছি। যখন ওভার দ্য উইকেট করার কথা, তখন রাউন্ড দ্য উইকেট করেছি। যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য না ধরে মৌলিক কিছু ভুল করেছি। মধ্যাহ্ন-বিরতির পর আমরা যা করেছি, তা খুবই হতাশার।’
মধ্যাহ্ন-বিরতির পর বাংলাদেশের এলোমেলো বোলিং নিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘সবসময় ডট বল করে রান রেট নিয়ন্ত্রণে রেখে, চাপের ফেরার বার্তাই থাকে। উইকেট নেওয়ার জন্যই আমাদের সেই প্রক্রিয়াটা দরকার। কিন্তু উইকেটের তাড়নায় আমরা অনেক বেশি আলগা বল করে ফেলেছি। ধৈর্য ধরা-শৃঙ্খলা রাখা, এই প্রক্রিয়াগুলোয় আমরা জোর দিয়ে বার বারই বলে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এক সেশন করতে পারি, আরেক সেশনে পারি না। লম্বা সময় চাপ ধরে রাখতে পারি না।’
প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এ বছর দশ ইনিংসের মধ্যে নয় ইনিংসেই ৩শ করতে ব্যর্থ হয় টাইগাররা। ব্যাটারদের ব্যর্থতা নিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এই মুর্হূতে ব্যাটিং ও বোলিং নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে। এটি কোনভাবেই আড়াইশ রানের উইকেট নয়। শেষের ওই ৩০ রানের জুটি না হলে ১৯০ রানে অলআউট হতাম আমরা। ব্যাট হাতে যথেষ্ট ভালো পারফরমেন্স আমরা দেখাতে পারছি না এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেখিয়ে দিচ্ছে, কেন তারা আমাদের চেয়ে ভালো। তারা দীর্ঘক্ষণ ব্যাট করছে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
চাপের মধ্যে থেকেও দিন শেষে সেঞ্চুরি তুলে অপরাজিত আছেন কাইল মায়ার্স। ১২৬ রান করেছেন তিনি। মায়ার্সের কাছ থেকে দলের ব্যাটারদের শিখতে বললেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার এখন ফর্ম-ছন্দ খুঁজছে। এখান থেকে বের হয়ে আসার একমাত্র উপায় লম্বা সময় ব্যাট করা। অনেক বেশি ৩০,৪০-৫০ রানের ইনিংস হচ্ছে, দু-একটা ফিফটি হচ্ছে। কিন্তু কাইল মেয়ার্স যা করেছে, তেমনটা কেউই করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মায়ার্সের ১২৬ রানের ইনিংস বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে ২৩০ ও ৪০০এর মধ্যে। গত বছর চট্টগ্রামে আমাদের বিপক্ষে ৪০০ রান তাড়া করেছে তারা। সে ২শ রান করেছিলো। কিন্তু আমাদের কেউ এখন বড় ইনিংস খেলতে পারছে না। এটা ছেলেদের জন্য বড় শিক্ষা। টেস্ট ম্যাচ অনেক কঠিন। ভালো ব্যাটিং করতে না পারলে, প্রতিপক্ষ শাস্তি দিবে।’
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL