কারখানা বন্ধ, অথচ পুঁজিবাজারে বেশ দাপট- এমন অনেক কোম্পানির কার্যক্রম অনুসন্ধান করে তা নিয়মিতই প্রকাশ করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে যথাযথ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের। জবাবে ডিএসই বলছে, ঠিকানা অনুযায়ী কারখানার অস্তিত্ব না মিললেও আইন মেনেই শেয়ারবাজারে লেনদেন করছে কোম্পানিগুলো।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি পরিচিত কোম্পানি হচ্ছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল)। অথচ গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা অনুযায়ী রাজধানীর বিজয়নগরে প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি দল। বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের দায়ে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে জব্দ প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব। কিন্তু পুঁজিবাজারে এখনও বেশ দাপট দেখিয়ে চলেছে কোম্পানিটি।
শুধু কেপিপিএলই নয়, অনুসন্ধান করে ফ্যামিলি টেক্স লিমিটেড, উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড ও রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডসহ বেশকিছু কোম্পানির কার্যালয় ও কারখানা বন্ধ পায় ডিএসই। যা নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হয় ডিএসইর ওয়েবসাইটে। তবে শুধু কারখানা বন্ধের খবর জানিয়েই দায়িত্ব শেষ না করে ওইসব কোম্পানির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বিনিয়োগকারীদের।
তারা বলছেন, উৎপাদন বন্ধ থাকার পরও শেয়ারবাজারে লেনদেন করা কোম্পানিগুলোর কারণে বাজারে অনেক ধরনের প্রভাব পড়ে। শেয়ারবাজার ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বুঝে শুনে কোম্পানি অনুমোদন দিতে হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসই এর এমডি এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন কারণেই কোম্পানি বন্ধ হতে পারে। তা পরিদর্শন করে বিনিয়োগকারীদের সেই তথ্য জানানোর পাশাপাশি তদন্ত শেষে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে জমা দেওয়া পর্যন্তই আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানি কেমন চলছে; কেন খারাপ করছে; বা কেন ভালো করছে; কেন বন্ধ হচ্ছে বা কোম্পানির পরিসর বাড়ছে-কমছে কি না- যে কোনো ধরনের তথ্যই হোক না কেন, সেগুলো নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা উচিত।
সম্প্রতি চালু হওয়া স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম গো-লাইভের মাধ্যমে আরও দ্রুত তথ্য প্রকাশ করে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা সম্ভব হবেও জানান এ টি এম তারিকুজ্জামান। তিনি বলেন, দ্রুত তথ্য প্রকাশ করে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করার বিষয়টি তো ম্যানুয়ালি হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে আমরা যে সিস্টেমটি যোগ করেছি, সেখানে তথ্য সরবরাহে দেরিও হবে না এবং কোনও ভুলও হবে না।
প্রথম দফায় ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তালিকাভুক্ত ৪২ কোম্পানির কার্যক্রম ও কারখানা পরিদর্শনের অনুমোদন চায় ডিএসই। তখন ১৪টির কার্যক্রম ও কারখানা পরিদর্শনের অনুমতি দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। দ্বিতীয় দফায় আরও ৩১টি কোম্পানির কার্যক্রম অনুসন্ধানের অনুমোদন নেয় ডিএসই। যেসব কোম্পানির তথ্য অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL