০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
০৩-ডিসেম্বর-২০২৪
Logo
অর্থনীতি

ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়: রয়েছে বিশেষ ছাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-০৯ ১৮:৪৪:১৮
...

হরেক রকমের পণ্য কিনতে ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় ভিড় বেড়েছে দর্শনার্থীদের। তৃতীয় সপ্তাহে এসে চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে বড় এই বাণিজ্য মেলা। বাড়ছে দর্শক সমাগম। আর দর্শকদের মেলামুখী করতে ব্যবসায়ীরাও আকর্ষণীয় অফারে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার কেনাবেচা তেমন নেই। তাই বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় বেশ জমজমাট পরিবেশ মেলায়। বরাবরের মতোই গৃহস্থালি পণ্য, হোম টেক্স ও অন্যান্য পোশাক, কসমেটিকস, খাবারসহ বিভিন্ন স্টলে দেখা মিলছে ক্রেতা উপস্থিতি। সময় কম তাই কেনাকাটাতেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন তারা।

হাতে আছে আর মাত্র কয়েক দিন। তাই লাভের অঙ্ক কমিয়ে এখন পণ্য বিক্রিতে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিক্রেতারা। রয়েছে মূল্যছাড়। কারও ব্যবসা আশাবাদী হলেও এবার বিক্রি কম বলে মনে করছেন অনেকে। এদিকে আগামী কয়েক দিনে কেনাবেচা বেশি হওয়ার আশা জানান ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা ছুটির দুদিন শুক্র ও শনিবারকে কেন্দ্র করে নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ, ক্রেতা বাড়াতে দিচ্ছেন নানান অফার সকল প্রকার পণ্যে মূল্যছাড়।

ক্রেতা টানতে বিশেষ ছাড় ও অফার নিয়ে হাজির হয়েছে বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নগুলো। খাদ্যপণ্যের ওপর স্পেশাল ছাড় দিচ্ছে বিস্ক ক্লাব। তাদের স্টলে ওয়েফার, কুকিজ ও কেকের স্পেশাল বক্সে ৩১০ টাকার আইটেম পাওয়া যাচ্ছে ২৪৯ টাকায়। এর সঙ্গে বক্স দেওয়া হচ্ছে ফ্রি।

তাদের বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, স্টলের প্রতিটি পণ্যেই রয়েছে বিশেষ ছাড়। এ ছাড়া বিভিন্ন কম্বো ও ফ্যামিলি কম্বো প্যাকেও রয়েছে আকর্ষণীয় ছাড়। মি. নুডলসের কম্বো প্যাকের সঙ্গে টমেটো সসের বোতল দেওয়া হচ্ছে ফ্রি।

পোশাক ও ক্রোকারিজ আইটেমেও রয়েছে ছাড়। মেলায় ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স বিশেষ ডিসকাউন্টে কম্বল, কমফি, ব্রেড কাভার, পিলো, কাশমিরি চায়না পর্দা বিক্রি করছে।

হোমটেক্সও দিচ্ছে কম্বল, বিছানার চাদরসহ আরও কয়েকটি পণ্য। প্রভিডেন্স দিচ্ছে জুতা, জ্যাকেট, শার্ট, পলো শার্ট, প্যান্টসহ আরও কয়েকটি পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়।

বনানী ও উত্তরায় শোরুমেও চলছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। ক্রোকারিজ আইটেমেও চলছে নানা অফার। এ ছাড়া ছাড় দিচ্ছে আরএফএলের প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানগুলোও। রয়েছে উপহারও।

স্টল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুরু হওয়া এই মেলায় এতদিনে দর্শনার্থী থাকলেও তেমন ক্রেতা দেখা যায়নি। তবে ছুটির দিনগুলোতে ক্রেতা ও দর্শনার্থী অনেক বেশি দেখা গেছে। মেলার শেষ সময়ে বিক্রি আরও বাড়বেন বলে জানান বিক্রেতারা।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত জমজমাট থাকে খাবারের স্টলগুলো। বসার স্থান না পেয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে সেরে নেন খাওয়ার কাজ। এবারের মেলায় ফুড বাংলো, সুলতান কাচ্চি, লাইবা রেস্টুরেন্ট, পুরান ঢাকার শাহি বিরিয়ানি, হাজির বিরিয়ানি, পুরান ঢাকার চিংড়ি ঝালফ্রাই, কস্তুরি কাবাবসহ বেশ কিছু খাবারের স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন খাবারের মধ্যে কাবাব, চিকেন মাসালা, বিরিয়ানি, হাঁসের মাংস, কাচ্চি, রাজাবাবুর চা ও তান্দুরি চায়ের চাহিদা বেশি। এ ছাড়া চিকেন বিরিয়ানি, চিকেন সাসলিক, ফালুদা, বিফ কাচ্চি, মাংস, সবজি, বডি কাবাব, মাটন হালিম, ফ্রাইড চিকেন, লাচ্ছি, নুডুলস, চিকেন চাপ, মাছ, কফি, মাটন কাচ্চি, জুস, ফুসকা, চিকেন গ্রিল, ডাল-পরোটা, ভাত, পানীয়, চটপটি, কাবাব ও খিচুড়ি থেকে শুরু করে থাই স্যুপের বেশি চাহিদা রয়েছে। তবে লুচি আর চিকেন চাপের চাহিদা বেশি। অনেকেই মাটির পাত্রে স্পেশাল চা, রাজাবাবুর চা ও তান্দুরি চা খেতে স্টলগুলোতে ভিড় জমান।

রাজধানীর কমলাপুর থেকে সপরিবারে মেলায় ঘুরতে আসা এক গৃহবধূ বলেন, স্টলগুলোতে খাবারের দাম বেশি। খাবারের মান ও পরিমাণ অনুযায়ী দাম আরেকটু কম হওয়া উচিত। রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে মেলায় আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রী বলেন, স্টলগুলোতে খাবারের বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ স্টলে মূল্যতালিকা নেই। আবার কেউ কেউ তালিকায় নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও খাবারের দাম বেশি রাখছেন। কেউ কেউ খাবার খেয়ে বিল দিতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। কেউবা খাবারের পর বিলের রসিদ দিচ্ছেন না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাম না প্রকাশের শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, খাবারের মূল্যতালিকা প্রদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা প্রদর্শন করা না হলে কিংবা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা কিংবা খাবারের দাম বেশি রাখা হলে আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুরু হওয়া ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা মেলা চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।