৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কিউইদের মাটিতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদী হাসানের বোলিং তোপে মাত্র ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে জেমি নিশামের ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১৩৪ রানের পুঁজি পায় কিউইরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে টাইগারদের জয় নিশ্চিত করে লিটন কুমার দাস। এই টাইগার ওপেনারের হার না মানা ৪২ রানের ওপর ভর করে ৮ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ক স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ১৩৫ রানের মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী শুরুর আভাস দেন টাইগার ওপেনার রনি তালুকদার।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই টিম সাউদিকে ছক্কা মারেন রনি। তবে বেশিদূর আগাতে পারেননি তিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে অ্যাডাম মিলনের লেন্থ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তপ এজ হয়ে সাউদির হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৭ বলে ১০ রান করেন রনি।
৩ নম্বরে নেমে দারুণ শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তাকে থিতু হতে দেননি জেমি নিশাম। ব্যক্তিগত ১৯ রানে তিনি কাটা পড়েন স্যান্টনারকে ক্যাচ দিয়ে। ৪ নম্বরে নামা সৌম্য ছিলেন বেশ মারকুটে মেজাজে। ইশ সোধিকে পর পর দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে ওয়ানডে সিরিজের ফর্ম টি-টোয়েন্টিতেও টেনে আনার ইঙ্গিত দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। অবশ্য তাকে থিতু হতে দেননি কিউই পেসার সিয়ার্স। তার গুড লেন্থের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হন ২২ রান করা সৌম্য।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও লিটনকে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস টানছিলেন তাওহিদ হৃদয়। এই জুটিতেই বাংলাদেশ বড় জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল। বেন সিয়ার্সকে কাউ কর্নার দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা মেরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন হৃদয়। লিটন-হৃদয়ের ২৯ রানের জুটি ভাঙেন মিচেল স্যান্টনার। ১৮ বলে ১৯ রানে সাজঘরে ফেরেন হৃদয়।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব। মাত্র ১ রান করে তিনি টিম সাউদির শিকার হন। অবশ্য বাকি সময়টা দেখেশুনে পার করেছেন লিটন ও শেখ মেহেদী। এই দু’জনে ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে, টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। এছাড়াও একাদশে জায়গা পান রিশাদ হোসেন ও সৌম্য সরকার।
ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ইনিংসের তৃতীয় বলেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মেহেদী। টিম সেইফার্টকে বোল্ড করেন এই অফ স্পিনার।
পরের ওভারে ফিন অ্যালেনকে স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান শরিফুল ইসলাম। পরের বলে তিনি এলবিডব্লিউ করেছেন গ্ল্যান ফিলিপসকে। ফলে মাত্র ১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে কিউইরা।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে ড্যারিল মিচেলকে বোল্ড করেন মেহেদী। ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিচেল। আক্রমণে এসে নিজের করা দ্বিতীয় বলেই উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। তিনি ১৯ বলে ১৯ রান করা মার্ক চ্যাপম্যানকে আউট করেন তানজিম সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে।
ষষ্ঠ উইকেটে কিউইদের হাল ধরেন মিচেল স্যান্টনার ও জেমি নিশাম। এই দু’জনে যোগ করেন ৪১ রান। স্যান্টনারকে শর্ট অব লেন্থ ডেলিভারিতে মিড উইকেটে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান শরিফুল। ফলে ২৩ রান করে ফিরতে হয় স্যান্টনারকে।
১৬তম ওভারে নিশাম চড়াও হন রিশাদের ওপর। ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা মারেন নিশাম। পরের বলে ডিপ অঞ্চল দিয়ে চার মারেন এই কিউই ব্যাটার। সেই ওভার থেকে আসে ১১ রান। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজুর রহমানকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন নিশাম।
বল স্টেডিয়ামের গ্যালারির ছাঁদে আটকা পড়ায় নতুন বল আনতে হয়। নতুন বলে মোস্তাফিজের অফ স্টাম্পের বাইরের লো ফুলটস বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ কাভারে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন ২৯ বলে ৪৮ রান করা নিশাম। পরের ওভারে এসে টিম সাউদিকে ডিপ স্কয়ারে আফিফ হোসেনের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ।
ইনিংসের শেষ ওভারে ইশ সোধিকে ফিরিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত তানজিম সাকিব। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL