২৪-নভেম্বর-২০২৪
২৪-নভেম্বর-২০২৪
Logo
জাতীয়

তিন মাসের রিজার্ভই যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৭-২৮ ১৬:০০:১৫
...

বাংলাদেশের রিজার্ভ দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। এতে তৈরি হয়েছে নানা শঙ্কা। তবে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন, এ নিয়ে অনেকে নানা ধরনের গল্পগুজব করছে। কিন্তু যে রিজার্ভ আছে, সেটি যথেষ্ট।

প্রধানমন্ত্রী বৈদেশিক মুদ্রা বাড়াতে রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রবাসী আয় দেশে আনার প্রক্রিয়া সহজ করা, হুন্ডির বদলে প্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেল বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টেনিয়াল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি চট্টগ্রামে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজিরও উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানে।

অনুষ্ঠানে ভোগ কমানো, দেশে উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবসময় একটা কথা মনে রাখতে হবে, পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। আমাদের নিজেরে পায়ে নিজেরা যাতে দাঁড়াতে পারি সেই ব্যবস্থাটাই করতে হবে।’

করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দর বেড়ে যাওয়ার মধ্যে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালামাটাল। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। পণ্য ও জ্বালানি মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ কমেছে অনেকটাই। দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো তা নেমে গেছে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কিছু লোক আছে এটা নিয়ে অনেক নানা ধরনের গল্প গুজব এটা সেটা করে বেড়ায়। আমি মনে করি আমাদের তিন মাসের খাদ্য কেনার যে রিজার্ভ সেটা থাকলেই যথেষ্ট।’

অনুষ্ঠানে জনশক্তি রপ্তানির পাশাপাশি দেশের জন্য জনশক্তির প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখের কিছু উপরে। সেই ক্ষেত্রে আমি বলব, আমাদের ৩৮ শতাংশ হচ্ছে যুব সমাজ। কাজেই আমাদের এই যুবশক্তিটা আমরা শুধু বিদেশে প্রেরণ করব, এই চিন্তা করলে হবে না। আমরা দেশে ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে আমাদের দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন আছে। কাজেই আমরা প্রশিক্ষণ দেবে, তারা বিদেশে যেমন কাজ করবে আবার দেশেও তারা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় সেটা ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বৈদেশির মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানোর ওপরও জোর দেন। তিনি কেবল রেমিট্যান্সের উপর নির্ভরশীল না হয়ে রপ্তানিতে জোর দিতে চান।

তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রেমিট্যান্সের উপর নির্ভরশীল না হয়ে আমাদের পণ্য যাতে বিদেশে রপ্তানি হয়, তাই পণ্য বহুমুখীকরণ করা এবং পণ্যের নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।

‘নতুন নতুন বাজারে কোন কোন পণ্যের কী কী চাহিদা আছে সেই ধরনের পণ্য বাংলাদেশে তৈরি করে প্রেরণ করতে হবে। সেখান থেকে যাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। সেই ব্যবস্থা আমরা নেব। অর্থ্যাৎ রপ্তানি নির্ভর আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দিকে আমাদের আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। সেদিকে আমি অনুরোধ করব, সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে।’

বিদেশ থেকে দেশে অর্থ পাঠানো আরও সহজ করার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি জানি অনেক জায়গায় তারা কাজ, করে কিন্তু সেখানে কোনো মানি এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংকের সুবিধা তারা পায় না যে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাবে। তাদের নির্ভর করতে হয় হুন্ডির উপর। এর উপর আমাদের দেশে কিছু লোক আছে, কিছু এজেন্ট আছে তারা নানাভাবে মানুষকে উসকায়। ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে তাতে তাদের লাভ হয়।’

খাদ্য বা কৃষি পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো এবং তা প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর জোর দেয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘ভোগ্যপণ্য অর্থ্যাৎ খাদ্যপণ্য, এটার উপর আমাদের পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে। নিজের দেশের উৎপাদন বাড়াতে হবে। শুধু পণ্য উৎপাদন না সেই সঙ্গে পণ্য সংরক্ষণেও আধুনিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এই খাদ্যপণ্য বা কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য শিল্প ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে। এতে নিজেরে দেশে যেমন মার্কেট তৈরি হবে আবার বিদেশেও যেন আমরা তা রপ্তানি করতে পারি।’