দিন পরিবর্তন ডেস্ক
পিঠে সিলিন্ডার বেঁধে করোনা আক্রান্ত মাকে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন ছেলে।মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এ দৃশ্য নজর কাড়ে সবার। সঙ্গে সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে ভাইরাল হয়ে যায়।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া হিরন পয়েন্টে এ দৃশ্য দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলে থাকা নারীর নাম রেহানা পারভীন (৫০)। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সূর্যপাশা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল হাকিম মোল্লার স্ত্রী। রেহানা নলছিটি বন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মোটরসাইকেলচালক তারই ছেলে কৃষি ব্যাংক ঝালকাঠি সদর শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান টিটু।
অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে মা রেহানাকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে দ্রুতগতিতে হাসপাতালে ছুটছেন টিটু। সঙ্গে আরেকটি মোটরসাইকেলে ছিলেন টিটুর দুই স্বজন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল গণমাধ্যমকে বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীকে ধরে রোগী বসে ছিলেন। যিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি হেলমেট পরা ছিলেন। তার চেহারা আমরা দেখতে পারিনি বা দেখার চেষ্টাও করিনি। তাদের থামিয়ে হয়তো পরিচয় শনাক্ত করতে পারতাম, কিন্তু সেটি হতো অমানবিকতা। অক্সিজেন পরিহিত যে নারী ছিলেন তার বয়স দেখে মনে হয়েছে মোটরসাইকেল আরোহীর মা হতে পারেন। পরে জানলাম তারা মা-ছেলে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দিক থেকে মোটরসাইকেলটি আসছিল। প্রথমে মোটরসাইকেলটিকে থামানোর সিগন্যাল দেই, কিন্তু যখনই দেখি মোটরসাইকেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিজেন মাস্ক পরে রোগী যাচ্ছেন তখন এক সেকেন্ডের জন্যও মোটরসাইকেলটি থামাইনি। বরং দ্রুত যেন চলে যায় সেই ব্যবস্থা করে দেই।
তৌহিদ টুটুল বলেন, রোগী বহনকারী মোটরসাইকেলটির পাশে আরেকটি মোটরসাইকেল ছিল। সেটিতে তাদের দুই স্বজন ছিল। মূলত রোগী যেন পড়ে না যান সেজন্য তারা পাশাপাশি চালিয়ে আসছিলেন। আমরা চেকপোস্ট অতিক্রম করিয়ে দিলে গাড়ি দুটো দ্রুত বরিশাল শহরের দিকে চলে যায়।
ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই চেকপোস্টে দায়িত্বরত সার্জেন্ট টুটুলের প্রশংসা করছেন।
টিটুর বড়ভাই পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান মিঠুর বন্ধু কেএম সবুজ ঢাকা পোস্টকে জানান, গত বুধবার রেহানা পারভীনের করোনা পজিটিভের রিপোর্ট আসার পর বাসায়ই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে দুপুর আড়াইটায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে টিটু তার মাকে ভর্তি করে। এখন সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL