বাংলাদেশে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছেন। শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে পৌঁছান মোদি। এ সময় তাঁকে অভ্যর্থনা জানান শেখ হাসিনা।
দুই সরকার প্রধান প্রথমে কিছু সময় একান্তে বৈঠক করেন। পরে তাদের নেতৃত্বে শুরু হয় দুই দেশের প্রতিনিধি দলের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক,যা চলে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই নেতার উপস্থিতিতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি ভার্চুয়ালি বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করারও কথা রয়েছে দুই প্রধানমন্ত্রীর।
সূত্র বলছে, দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আধাঘণ্টার মতো আলাপ-আলোচনা করবেন। পরে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা স্মারক সই হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে কানেক্টিভিটি তথা যোগাযোগের ওপর জোর দেবে ঢাকা। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আন্তঃবাণিজ্য বাড়াতে সড়ক, রেল ও নৌপথ ছাড়াও সমুদ্র যোগাযোগের বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে। সামনের দিনগুলোতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের পথচলা এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলা ও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠক শেষে দুই শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে সাতটি প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। সেগুলো হলো- শিলাইদহের সংস্কার করা কুঠিবাড়ি, মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া হয়ে কলকাতা পর্যন্ত স্বাধীনতা সড়ক, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি সমাধি, বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দেওয়া ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু, দুটি সীমান্ত হাট চালু এবং স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে তাকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। সেখানে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নরেন্দ্র মোদি। বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
সেখানে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশ-ভারত সামনের দিনগুলোতে যৌথভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে তৈরি করা বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর উদ্বোধন করেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শন করেন এবং পূজা দেন। পরে হেলিকপ্টারে টুঙ্গি পাড়ায় যান। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নরেন্দ্র মোদি। সমাধি কমপ্লেক্স ঘুরে দেখার পর পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর এবং বঙ্গবন্ধু ভবনের পাশে একটি বকুল গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিতি ছিলেন।
পরে কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁকে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ডঙ্কা-কাঁসা বাজিয়ে বরণ করে নেন ঠাকুরবাড়ির মতুয়ারা। সেখানে তিনি পূজা-অর্চনা করেন। পরে তিনি ঠাকুরবাড়ির সদস্য ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL