বিলুপ্ত ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর ভোররাতে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
এতে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির, আল্লামা নুরুল ইসলামকে মহাসচিব এবং মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী ও দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে সদস্য করা হয়। এছাড়া আহ্বায়ক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয় মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকে।
সোমবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে ফেসবুক লাইভে এ কমিটি ঘোষণা করেন হেফাজতের সাবেক ও নবগঠিত কমিটির মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, চলমান অস্থির ও নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা পরবর্তী উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শক্রমে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো।
এই আহ্বায়কগণ অতি দ্রুত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন বলে জানান আল্লামা নুরুল ইসলাম।
এর আগে মধ্যরাত আড়াইটার দিকে হেফাজতে ইসলাম নিজেদের ফেসবুক পেজে তিন সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিল।
এদিকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির পর রাতেই নতুন কমিটি করার ঘোষণা দেন বিদ্রোহীরা। শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী এই কথা জানান।
ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আমরা শিগগিরই আল্লামা আহমদ শফী সাহেবের নীতি ও আদর্শের হেফাজতে ইসলাম গঠন করব। কওমি ওলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লামা আহমদ শফী সাহেবের নীতি আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাব। আশা করি দেশবাসী আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী আরও বলেন, গত ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর কাউন্সিলের নামে একটি সিন্ডিকেট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আমি বারবার বলেছি, এটা একটা অবৈধ কমিটি। হেফাজতের মূল লক্ষ্য উদ্দেশকে বিসর্জন দিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে। কমিটি গঠনের সাড়ে চার মাসের মাথায় এসে বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। আমি এ কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণাকে স্বাগত জানাই।
এর আগে রাত ১১টায় এক ভিডিওবার্তায় জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক সংগঠন, ঈমানি-আকিদার সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। হেফাজতে ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে হেফাজতের যাত্রা শুরু। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার তৎকালীন মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই সংগঠনের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন।
আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। পরের মাস ডিসেম্বরের ১৩ তারিখে নূর হোসাইন কাসেমী মারা গেলে নায়েবে আমির নূরুল ইসলাম জিহাদীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL