জাতির ইতিহাসে ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস আজ। ৭১' এর এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ নামে নতুন এক রাষ্ট্র। এরপরের ৯ মাসের ইতিহাস রক্তক্ষয়ী এক মুক্তিযুদ্ধের, লাখো শহীদের মহান এক আত্মত্যাগের, যার উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। মহান এই দিবসটি উপলক্ষে জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বাংলার সূর্যসন্তানদের। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভোর থেকেই মানুষের ঢল নেমেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে ভিড় করে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। শহীদ বেদিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সৌধ প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করা হলে বাড়তে থাকে জনতার স্রোত। শিশু-ছেলে-বুড়োসহ সব বয়সী মানুষের আগমনে মুখর হয়ে ওঠে সৌধ প্রাঙ্গণ।
এদিন সকালে বীর শহীদদের স্মরণে শহীদ বেদিতে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবসের ৫৪ বছর পূর্তির রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি। রাষ্ট্রীয় কায়দায় শহীদদের প্রতি সালাম জানান সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর চৌকস দল। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এরপর সৌধ প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সর্বস্তরের মানুষের জন্য। সারিবদ্ধভাবে ফুল নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে লাখো জনতা। মুহূর্তেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।
ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে শহীদ বেদি।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যুদ্ধাহত অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এসেছেন শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের অনেকের হাতে ছিলো লাল-সবুজের বিজয় পতাকা।
মিরপুর থেকে বাবার সঙ্গে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে শিশু ইমন। বাবা রহমান সিদ্দিকী বলেন, জাতির বীর সন্তানদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে মিরপুর থেকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি।
এ সময় কথা হয় খসরু নামে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে আমরা বিজয়ী হয়েছি। যাদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নিতে পেরেছি, তাদের অনেকেরই নাম জাতির জানা নেই। কিন্তু, তারা মিশে আছেন আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে।
৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান উঁচু ভবনগুলোতে উত্তোলন করা হয়েছে জাতীয় পতাকা। আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো। জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোও।
dp-asif
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL