নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সীমিত পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরকার লোড-শেডিং দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন তিনি ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু এখন আমাদের লোড-শেডিং দিতে হবে এবং বিদ্যুতের উৎপাদন সীমিত করতে হবে কারণ, আমাদের বিদ্যুতের ভর্তুকির পরিমান বহুগুণ বেড়ে গেছে।’
শেখ হাসিনা আজ চুয়েট ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ নামে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
‘এদিন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ব¦বিদ্যালয়ে শেখ জামাল ডরমিটরি এবং রোজী জামাল ডরমিটরি’র ও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংরক্ষণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক লোড-শেডিংয়ের জন্য একটি রুটিন তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘কোন এলাকায় কত সময় লোড-শেডিং দেওয়া হবে তার একটি রুটিন তৈরি করুন। কারণ, জনগণ যেন সেজন্য প্রস্তুত হতে পারে এবং তাদের দুর্ভোগ কমানো যায়।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী তেল, এলএনজি, ডিজেলসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে এবং আমেরিকা ও ইউরোপের রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটছে তা উপলব্ধি করে দেশবাসী সরকারকে এ লক্ষে সহায়তা করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তার সরকার বর্তমানে বিদ্যুৎ খাতে মোট ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু রাখার জন্য গ্যাসের চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানিতে আমাদেরকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।’
বর্তমান বাজেটে ৮৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তুকি না কমালে সরকার টাকা কোথা থেকে পাবে।’
তিনি বলেন, ভর্তুকি ছাড়াও তাঁর সরকার দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য প্রণোদণা প্যাকেজ দিয়েছে, ভর্তুকি মূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে এক কোটি রেশন কার্ড দিয়েছে এবং বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিচ্ছে, যা অনেক ধনী দেশ ও করেনি।
সরকার প্রধান সারাদেশে ২৭১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা দেন। যার মধ্যে ২০৫১টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে এবং ৬৬৫টি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এমপিও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষায় বিনিয়োগকে ব্যয়ের পরিবর্তে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেছে। কারণ, তাঁরা বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক প্রজন্ম তৈরি করতে চায়, যাতে নতুন প্রজন্ম সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে ‘চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’-এর ওপর একটি অডিও-ভিডিও প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক স্বাগত বক্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL