হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) আগামী বছরের জন্য ঘোষিত হজ প্যাকেজের হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি দিয়েছে । রোববার (৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আপনার সরাসরি দিকনির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এসেছে এবং বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে।
চিঠিতে আগামী বছরের জন্য হজের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে হাব বলেছে, নির্ধারিত ভাড়া বিগত বছর থেকে ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কম হলেও, বিভিন্ন বিষয়াদি বিবেচনায় আরও কমানো সম্ভব। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি বলে হাব কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ মনে করে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে এয়ারলাইনসগুলো প্রায় ৭৫ হাজার টাকায় ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রিটার্ন টিকেট বিক্রি করছে এবং প্রায় ২০ শতাংশ আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে হজের সময় প্রায় শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট গমন করে। এ ছাড়া খালি ফিরতি ফ্লাইটের পরিচালনা ব্যয়ও কম মন্তব্য করে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সাধারণ ফ্লাইটের বিপণন ও সিস্টেম পরিচালনায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়, যা হজের ফ্লাইটে করতে হয় না। সে হিসাবে, হজ ফ্লাইটের সর্বোচ্চ বিমান ভাড়া ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হতে পারতো বলে দাবি করেছে হাব।
বর্তমান প্রেক্ষিত বিবেচনায় একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছে অ্যাসোসিয়েশেন।
হজ ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কল্যাণে ও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আপনার নেওয়া সব পদক্ষেপ এরই মধ্যে সর্বমহলে বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে। হজযাত্রীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রথা বাতিল, আধুনিক ই-হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্নকরণ, আশকোনা হজ ক্যাম্প সংস্কার ও বর্ধিত করাসহ হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আপনি অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। এটি হজ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, ২ নভেম্বর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। এরমধ্যে সরকারি কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন। এ ছাড়া বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনের কোটা ১ লাখ ১৭ হাজার জন।
হজ প্যাকেজের মূল্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি সাধারণ প্যাকেজ মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে সাধারণ প্যাকেজের ব্যয় গত বছরের তুলনায় ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম।
বিমান ভাড়া কমানোর কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিমান ভাড়া ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ তারিখে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন আর বেসরকারি এজেন্সির কোটা ১ লাখ ১৭ হাজার।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL