২৪-নভেম্বর-২০২৪
২৪-নভেম্বর-২০২৪
Logo
জাতীয়

১৫ বছরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আয় বেড়েছে ১১ গুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২৩-১২-০৭ ১৯:২০:৩১
...

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক। এবারও এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
গত ১৫ বছরে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আয় বেড়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকার বেশি। তার আয় বেড়েছে সাড়ে ১১ গুণ। অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি। বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কোনো ইলেকট্রনিক সামগ্রী নেই।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামার তথ্য এবং এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জমা দেওয়া হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবার হলফনামায় পেশা হিসেবে ‘মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ উল্লেখ করেছেন। আর ২০০৮ সালের হলফনামায় তিনি পেশা হিসেবে ‘ব্যবসা ও অন্যান্য’ উল্লেখ করেছিলেন। বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট অথবা অন্যান্য ভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য বাবদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বার্ষিক আয় এখন ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা ২০০৮ সালে ছিল ৭১ লাখ। এ হিসাবে গত ১৫ বছরে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
অর্থাৎ ১৫ বছরে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে। বেড়েছে অস্থাবর সম্পদও। এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ। এবার নগদ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকা, বন্ড ও ঋণপত্র, যানবাহন ও অন্যান্য বাবদ তার অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ৭০ কোটি ৩৩ লাখ। যা ২০০৮ সালে ছিল ৬ কোটি ৭৮ লাখ। এ হিসাবে ১৫ বছরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য বেড়েছে ৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লি. এবং সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার ও কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের কাছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার দায় রয়েছে। ২০০৮ সালে সেই দায়ের পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার দায় রয়েছে। তবে হলফনামায় তিনি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের কোনো হিসাব দেননি।
২০০৮ সালে জাহিদ মালেকের নামে অকৃষি জমি ছিল ২ দশমিক ৫ কাঠা এবং তার স্ত্রীর ছিল ২ দশমিক ৫ কাঠা। এছাড়া ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ জমিতে ১১ তলা আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন ছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। যৌথ মালিকানায় ৪০ বিঘা কৃষিজমি ছিল। এখনও এই স্থাবর সম্পদের পরিমাণ অপরিবর্তনীয় রয়েছে। তবে স্ত্রীর নামে ২ দশমিক ৫ কাঠার ওই জমি এবার নির্ভরশীলদের নামে স্থানান্তর করা হয়েছে। যৌথ মালিকানার ৪০ বিঘা কৃষিজমি এবার নির্ভরশীলদের নামে রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে হলফনামা অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রী শাবানা মালেকের সামান্য অস্থাবর সম্পদ কমেছে। ২০০৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্ত্রীর ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকার বন্ড বা ঋণপত্র ছিল। এবারের হলফনামায় তা উল্লেখ নেই। তবে ১৫ বছরে তার পাঁচ ভরি স্বর্ণ বেড়ে হয়েছে ৫৫ ভরি। ১৫ বছরে শাবানা মালেকের প্রায় ৩৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ কমেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আকতারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৯ জন প্রার্থী। তবে যাচাই-বাছাই শেষে দুইজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই আসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সাতজন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ছয়টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনের মাঠে ভোটের লড়াই করবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।