নরসিংদী
নরসিংদীর রায়পুরায় ডাচ-বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এজেন্ট শহিদুল ইসলাম লিটন উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার পরিচালক।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, ঘটনার পর থেকে শহিদুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এ দিকে ঘটনার পর আব্দুল কাইয়ুম (৪৫) নামে ব্যাংকটির এরিয়া ম্যানেজার শনিবার বিষপান করেছেন বলে জানা গেছে। ২৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহত আব্দুল কাইয়ুমের স্ত্রী আমেনা বেগম।
আব্দুল কাইয়ুম উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের রামনগর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার অধীনে রায়পুরায় ৩০টি আউটলেট (এজেন্ট শাখা) ছিল। অন্যদিকে শহিদুল ইসলাম লিটনের বাড়ি একই উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নের আলগী বাজার শাখার ব্যাংক কার্যালয় তালাবদ্ধ রয়েছে। ওই শাখার ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন।
নিহতের স্ত্রী ও স্বজনরা জানান, ঘটনার পর থেকেই কাইয়ুমের উপর মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন ব্যাংকটির রিজিওনাল ম্যানেজার (আর.এম.) রেদোয়ান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এক পর্যায়ে রেদোয়ান গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করতে হবে এ সংক্রান্তে কাইয়ুমের কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। বারবার কর্তৃপক্ষের চাপ সইতে না পেরে বিষপান করেন আব্দুল কাইয়ুম।
পরিবারের সদস্যরা প্রথমে কাইয়ুমকে ভৈরবের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাইয়ুম মৃত্যুবরণ করেন।
কাইয়ুমের মৃত্যুর ব্যাপারে রেদোয়ান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে দায়ী করছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। এ ঘটনার পর থেকে ব্যাংকটির অন্যান্য কর্মকর্তারা নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে ভুক্তভোগী গ্রহকেরা জানান, ডাচ-বাংলা ব্যাংককে ‘বিশ্বস্ত’ মনে করে অনেকেই এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন। তাদের শাখা থেকে জমা রশিদও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম লিটন গ্রাহকদের না জানিয়ে কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহাবুবুর রহমান জানান, এরিয়া ম্যানেজারের আত্মহত্যার বিষয় ও টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ এখনও আসেনি।
রেদোয়ান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
নরসিংদীর ডাচ-বাংলা ব্যাংক ম্যানেজার ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি হেড অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL