নিজস্ব প্রতিনিধি
সাভার প্রতিনিধি:
সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সকল বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে অবৈধভাবে অবস্থানরত সাবেক শিক্ষার্থীদের আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি সভা শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে অবৈধভাবে অবস্থানরত সাবেক শিক্ষার্থীদের আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আবাসিক হল ছেড়ে চলে না গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও ক্যাম্পাসে অনুমোদনহীন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা, ভাসমান দোকানপাট উচ্ছেদ এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৬ জনের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করার জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের সাময়িক বহিষ্কার, সনদপত্র স্থগিত এবং তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এ সকল সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে জানান উপাচার্য।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, তাকে সাহায্যকারী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেন, মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী, একই বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ পরান, ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. হাসানুজ্জামান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর। এদের মধ্যে শাহ পরান ছাড়া সবাইকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে মুরাদ, সাব্বির ও মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত সকলেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এর আগে, শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে হল-সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, তার সহযোগী হাসান প্রান্ত, সাগর সিদ্দিকী এবং সাব্বির হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL