২৪-নভেম্বর-২০২৪
২৪-নভেম্বর-২০২৪
Logo
ঢাকা

নরসিংদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০১-২৫ ১৩:৫৭:১০
...

নরসিংদী
নরসিংদীর মেঘনায় ভাসমান খাঁচায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
এতে করে ভাসমান মাছ চাষে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে প্রায় দুইশত পরিবারের। নদীর পানিতে ভাসমান চাষের মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে স্বাদ অনেক এবং বেশি দাম পাওয়া দিন দিন এর প্রতি অনেকেরই আগ্রহ বাড়ছে। তেলাপিয়া, কই শিং,পাবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে এ খাঁচায়। এক একটি তেলাপিয়ার ওজন হয় এক দেড় কেজি। ওজনে বড় হ ষওয়ায় অধিক দাম পেয়ে অনেকের পরিবার আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরায় অপার সম্ভাবনা নিয়ে ২০১০ সাল থেকে খাঁচায় ভাসমান ভাবে মাছ চাষের যাত্রা শুরু হয়। উপজেলার চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের মেঘনার পাড়ে হাজী কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রথমে মেঘনা নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। তার এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ বেশ লাভজনক হয়ে উঠলে গ্রামের অন্যান্য খামারীরা তার দেখাদেখি এ পদ্ধতিতে মেঘনায় মাছ চাষ শুরু করে। এখন সরকারীভাবে নিবন্ধিত ৩৫ জন খামারীর প্রায় তিন হাজার খাঁচা রয়েছে মেঘনায়।

তাছাড়া আরো অনেকেই মাছ চাষ করছেন যাদের সরকারীভাবে নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন শতাধিক খামারী প্রায় ৭ হাজার খাঁচায় সরাসরি ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতিদিন এসকল ভাসমান খাঁচা থেকে কয়েক হাজার মেট্রিন টন মাছ বিক্রি হচ্ছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে নরসিংদী জেলার অন্যান্য উপজেলার বাজারগুলোতে বিক্রি হয়। এ মাছ পুকুরের মাছের চেয়ে বাড়ে বেশী সেইসাথে স্বাদেও অতুলনীয়। বাজারে পুকুরের মাছের চেয়ে নদীতে চাষের মাছের দাম অনেক বেশী হওয়ায় অনেক পরিবার আর্থিক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

এ ব্যাপারে সফল মাছ চার্ষী মো: মুছা মিয়া জানান, প্রথমে তার বাবা কামাল হোসেন এ উপজেলার চর আড়ালিয়ার মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি তার বাবার এ পেশাকে ধরে রেখেছেন। তার আড়াইশ খাঁচা থেকে সপ্তাহে তিন চারদিন মাছ বিক্রি করতে পারেন।

তিন থেকে চার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করে তিনি তার সংসারে সফলতা ফিরিয়ে এনেছেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে চাষ শুরু করেছেন। মাছ চাষী ভিকচান মেম্বার মছুার বাবার মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে এখন সফল খামারী। তার মতো আরো শতাধিক খামারী রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে কলকারখানার দূষিত বর্জ্য সরাসরি নদীর পানির সাথে মিশে পানি দুষণের ফলে অনেক সময় মাছ মরে গিয়ে ভেসে উঠে। ফলে মাছ খামারিদের লোকসানের ঘানি টানতে হয়। নদী দুষণ রোধ করে নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন মৎস্য খামারীরা।

নদীতে ভাসমান মাছ চাষে খামারীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হাবিব ফরহাদ আলম। যারা নদীতে ভাসমান মাছ চাষ করতে উদ্যোগী হবে তাদেরকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। এদিকে নদী দুষণ ও নদীর নাব্যতা ফিরে পেতে নদী দূষণ রোধ করা সহ নদী খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আকারে জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।