২৩-নভেম্বর-২০২৪
২৩-নভেম্বর-২০২৪
Logo
ফুটবল

১০ জনের পোর্তোকে হারিয়েও ইউভেন্তুসের বিদায়

দিন পরিবর্তন ডেস্ক

প্রকাশিতঃ ২০২১-০৩-১০ ১৬:০০:৪৬
...

উত্তেজনায় ভরপুর এক লড়াইয়ের সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। প্রথম পর্বে হারের ধাক্কা চেনা আঙিনায় কাটিয়ে উঠবে কী, উল্টো শুরুতেই গোল হজম করল ইউভেন্তুস। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঠিকই জমে উঠল লড়াই। এক জন কম নিয়েও কঠিন চ্যালেঞ্জ জানালো পোর্তো। ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও প্রথম গোল পেল সফরকারীরা। ফলে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা ম্যাচ জিতলেও দুই লেগের লড়াই শেষে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল পর্তুগালের দলটি।


চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল পোর্তো। টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতাটির শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল ইউভেন্তুস। ইউভেন্তুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে ফিরতি লেগে ৩-২ গোলে জেতে স্বাগতিকরা। দুই লেগ মিলে স্কোরলাইন ৪-৪। অ্যাওয়ে গোলে শেষ আটের টিকেট পেল পোর্তো।


গত আসরে অলিম্পিক লিওঁর মাঠে হারের পর ঘরের মাঠে জিতেও অ্যাওয়ে গোলে পিছিয়ে বিদায় নিয়েছিল ইউভেন্তুস। মরিয়া ইউভেন্তুস এগিয়ে যেতে পারতো ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই। তবে ডান দিক থেকে হুয়ান কুয়াদরাদোর ক্রসে আলভারো মোরাতার জোরালো হেড ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আগুস্তিন মারচেসিন।

খানিক পর গোল খেতে বসেছিল ইউভেন্তুসও। প্রতিপক্ষের ভালো একটি প্রচেষ্টা ডি-বক্সে ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি ব্লক করলেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ছন্দে থাকা ফরোয়ার্ড মেহদি তারেমির হেড পোস্টের ওপরের দিকে লেগে ফিরলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় স্বাগতিকরা।

তবে বেশিক্ষণ জাল অক্ষত রাখতে পারেনি তারা। ১৯তম মিনিটে পর্তুগিজ মিডফিল্ডার সের্হিও অলিভেইরার সফল স্পট কিকে পিছিয়ে পড়ে ইউভেন্তুস। ডি-বক্সে তারেমিকে পেছন থেকে ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় পোর্তো। শেষ হয়ে যায় ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের অ্যাওয়ে গোলের ন্যূনতম স্বস্তিটুকুও।

২৭তম মিনিটে আবারও হতাশ করেন মোরাতা। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে বল বুক দিয়ে নামিয়ে দুরূহ কোণ থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি। অবশ্য সঠিক সময়ে এগিয়ে পথ আগলে দাঁড়ানোয় মারচেসিনের কৃতিত্ব কোনো অংশে কম নয়।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় ইউভেন্তুস। বোনুচ্চির উঁচু করে বাড়ানো বল ডি-বক্সে পা দিয়ে নামিয়ে সামনেই দাঁড়ানো চিয়েসাকে শট নিতে ইশারা করেন রোনালদো। কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নিতে ভুল করেননি প্রথম লেগের শেষ দিকে দলকে অ্যাওয়ে গোল পাইয়ে দেওয়া এই ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড।

খানিক পরেই বড় ধাক্কাটা খায় পোর্তো; তিন মিনিটে জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তারেমি। ৫৪তম মিনিটে একজনকে ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ড পান তিনি। এর দুই মিনিট পর মাঝমাঠে ইউভেন্তুসের দেমিরালকে ফাউল করেন মারেগা। রেফারির বাঁশি শুনেও বলে কিক করে বহিষ্কার হন তারেমি।

১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পরপরই গোল হজম করতে বসেছিল পোর্তো। তবে চিয়েসার প্রচেষ্টা লাগে পোস্টে। অবশ্য ৬৩তম মিনিটে ঠিকই দলকে এগিয়ে নেন তিনি। ডান দিক থেকে কুয়াদরাদোর দারুণ ক্রস ছয় গজ বক্সে পেয়ে হেডে দুই লেগ মিলে স্কোরলাইন ৩-৩ করেন ২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।

৭৮তম মিনিটে শেষ আটের পথে এগিয়ে যেতে পারতো ইউভেন্তুস। কুয়াদরাদোর আরেকটি দারুণ ক্রস দারুণ পজিশনে পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেডে হতাশ করেন রোনালদো। চার মিনিট পর চিয়েসার আরেকটি শট রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মারচেসিন। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মোরাতা জালে বল পাঠালেও গোল মেলেনি। দুই মিনিট পর কুয়াদরাদোর বুলেট গতির শট ক্রসবারে বাধা পেলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের প্রথম ২৪ মিনিটে দুই দলের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ১১৫তম মিনিটে দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি কিকে ম্যাচে সমতা টানেন অলিভেইরা। অনেক দূর থেকে তার নেওয়া নিচু ফ্রি কিকে বল লাফিয়ে ওঠা রক্ষণ প্রাচীরের নিচ দিয়ে ঠিকানা খুঁজে পায়। গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি ঝাঁপিয়ে বলে হাত লাগালেও রুখতে পারেননি।

দুই মিনিট পরেই অবশ্য আবারও ম্যাচে এগিয়ে যায় ইউভেন্তুস। ফেদেরিকো বের্নারদেস্কির ক্রসে হেডে দুই লেগ মিলে স্কোরলাইন ৪-৪ করেন আদ্রিওঁ রাবিও। কিন্তু বাকি সময়ে পোর্তোর রক্ষণ আর ভাঙতে পারেনি তারা। ফলে ম্যাচ জিতেও হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয় দলটিকে।

ম্যাচের আগের দিন টুর্নামেন্টের রেকর্ড গোলদাতা রোনালদোর ওপর আস্থা রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর আশাবাদ শুনিয়েছিলেন ইউভেন্তুস কোচ আন্দ্রেয়া পিরলো। প্রতিদান দিতে পারেননি পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। পুরো ম্যাচেই তিনি ছিলেন অনুজ্জ্বল। শেষ পর্যন্ত ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিতে হলো তুরিনের দলটিকে।