২৮-নভেম্বর-২০২৪
২৮-নভেম্বর-২০২৪
Logo
বরিশাল

পান চাষে বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-১০ ১৬:৫৯:০৪
...

সোহেল হোসাইন, বাউফল (পটুয়াখালী) :
পটুয়াখালী বাউফলে পান চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
উপজেলার বগা ইউনিয়নে পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে পান চাষিরা, গত বছরের চেয়ে এবছরে তিনগুণ দাম বেশি পাচ্ছেন কৃষক এতে লাভবান ও আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা।

পানের মধ্যে রয়েছে বাংলা পান,সাঁচি পান, মিঠা পান, গোলাব পান, জর্দা পান,কহিনুর পান, বেনরসি পান, আরও প্রভিতি ধরনের পান জাত রয়েছে।
বাংলা পান জাতের পাতার ফলক বড়, পাতলা, গোলাকার ও পাতাগুলি ছোট। পাতার বোঁটা বেশ লম্বা, এর শাখা হয় না, ফলন সব থেকে বেশি এবং স্বাদও ভালো। মিঠা পানের পাতা ছোট, মোটা, নরম ও লম্বাটে।

এবছর বাউফলে প্রায় ২১ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়েছে, পান চাষ লাভজনক হওয়ায় গ্রাম অঞ্চলেও নতুন করে পানের বরজ তৈরি করছেন নতুন ৬ জন পান চাষি।
অন্যদিকে এ ব্যাবসা থেকে সরে গেছেন অর্ধ শতাধিক পান চাষী, অভিজ্ঞ চাষিদের থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন নতুন চাষিরা। এছাড়া, জটিল বিষয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শও নিচ্ছেন তারা।

সরজমিনে দেখা গেছে, এবারের শীতের ও তীব্র গরমে তেমন প্রভাব পড়েনি পানের বরজে, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশ ভালো।
চাষীদের হিসাবে ৪টা পানে ০১গোন্ডা তার ৯ গোন্ডায় এক চল্লী,আর ২০ চল্লীতে ০১ বিরা পান, ৮০ বিরা ১ গাদি,বাজারে ঘুরে,১ চল্লি বড় পাতা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা,মধ্যাম পর্যায়ে ১ চল্লি ৫০-৮০টাকা, সর্বনিম্ন পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকা চল্লি।

বামনীকাঠী গ্রামের পান চাষি বিমল চন্দ্র দাষ বলেন, ‘আমার ৬ শতাংশে দুইটা বরোজ আছে। প্রায় ২০থেকে ৩০বছর পর্যন্ত গোল পাতা মিস্টি পান চাষ করি। নিজের বরে নিজেই সব কাজ করি। মাঝে মধ্যে বাহির থেকে লোক কাজে নেই,প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পান পরিচর্যা করি।
এবছর পানের ফলন ভাল হয়েছে। অন্যান্য বছরে শীত কুয়াশায় পান নষ্ট হয়। কিন্তু এবছর প্রচুর কুয়াশা ও শীতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি পানের। এবার কঠিন গরমেও তেমন প্রভাব পরেনি পানের গায়ে,আমি মাসে ২টা বরজ থেকে ১০০ বিরা পান নামাই, সেগুলো কে পাইকারি বাজারে ২০০০০ টাকা বিক্রি করি,পান চাষ ছাড়া অন্য কোন চাষাবাদ করি না। এটি চাষ করে ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব ভাল আছি।

বানাজোরা গ্রারামের আরেক পান চাষি মোকবুল হোসেন বলেন, ‘পরিবার পরিজনদের সঙ্গে নিয়ে পানের বরজের পরিচর্যা করে আসছি। এবছর আমার বরজে ঝাড়া পান বেশি পেয়েছি। পুরাতন পান শেষের দিকে।নতুন পানপাতা বের হতে শুরু করেছে। তবে কিছু ঝাড়া পান আগালে রেখেছি ভাল দাম পাবো বলে। কয়েকদিন পর পানের বাজার আরও চড়া হবে। তখন ঝাড়া (বড়পাতা) পান নামাবো এবং বেশি দামে বিক্রি করতে পারলে ভাল লাভ হবে। সংসারের সকল চাহিদা মেটাবো।’

বগা বাজারের পান ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরে এসময় পানের দাম অনেক বেশি। প্রতি বছর এসময় পানের দাম কম থাকে। যেমন বড় পান ৪০টাকা মাঝারি ৩০ ও ছোট পান ২০ টাকা দর। কিন্তু এ বছর পান তিনগুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বাজার থেকে। এতে করে বেশি প্রভাব পড়ছে পানের খিলির দোকানে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেদোয়ান উদ্দিন তালুকদার বলেন,অন্য বছরের চেয়ে এবছর পান বেশ ভাল হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব পড়েনি তাদের পানের বরোজে। রোগ-বালাইও কম হয়েছে। এছাড়া, আমরা প্রতিনিয়ত তাদের পানের বর পরিদর্শন করছি।
নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি কৃষকদের। ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা দিন দিন পান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এখানকার উৎপাদিত পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠানো হচ্ছে।