০৪-ডিসেম্বর-২০২৪
০৪-ডিসেম্বর-২০২৪
Logo
ময়মনসিংহ

পূর্বধলায় শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০১-২৫ ১৫:১৬:৫৭
...

মোঃ শফিকুল ইসলাম খান,পূর্বধলা (নেত্রকোনা)
গারো পাহাড়ের পাদদেশে সীমান্তবর্তী নেত্রকোনার পূর্বধলায় শীত কে উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। শুরু হয়েছে বোরো মৌসুমের চারা রোপণ। জমি তৈরি, হাল চাষ, বোরো ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠানো শেষে এবার চারা জমিতে রোপণের মতো কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষকরা।

এ এলাকায় সাধারণত আমন ও বোরো ধানের প্রচুর আবাদ হয়ে থাকে। নিচু জমি যেমন খাল-বিল ঘেঁষা রয়েছে সেসব জমিতে আগাম চাষ দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করতে হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে বোরো ধানের চারা উঠাচ্ছেন ও রোপন করছেন। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে কৃষকরা বোরো মৌসুমে ধানের চারা রোপণের ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বোরো আবাদের ধুম চলছে।

উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে কেউ কেউ ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ কেউ স্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠাচ্ছেন। বেশকিছু জমিতে আবার অনেকে চারা রোপণ করেছেন। কৃষকেরা জানান, আমরা প্রতি বছরই ধানের চাষ করি। তবে দিন দিন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আর সে অনুযায়ী ধানের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় এবং ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছিলাম। তাই লোকসান কাটিয়ে ওঠার আশা নিয়ে এবারও বোরো ধানের আবাদ শুরু করেছি।

শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছি। জমিতে চারা রোপন করতে শ্রমিক সংকটে পড়তে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ইরি-বোরো মৌসুমে ২১ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে ধান রোপন শেষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ধান উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন । আরো জানা যায় উপজেলার ৯ হাজার ২০০ জন কৃষককে সরকারি ভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৪ হাজার ২০০ জনকে হাইব্রিড এবং ৫ হাজার জন কৃষককে উপশী জাতের ধান বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলার বেড়াইল গ্রামের কৃষক মো.ফজলুল হক বলেন, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি। ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ ভালো হলে বেশি লাভবান হবো। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আলমগীর কবীর জানান, ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ ভাগ জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে বাকি আবাদ সম্পন্ন হবে। গত আমনের উৎপাদন ভাল হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদিত ধানের বাজার মূল্য ভাল পাওয়ায় এবার কৃষকেরা উৎসাহ নিয়ে শীত উপেক্ষা করেও বোরো আবাদ শুরু করেছেন।

তাদের বোরো চারা রোপণ করাসহ বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। শীতের কারণে ফসল ও বীজতলার তেমন ক্ষতি হয়নি। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ারও সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ধান উৎপাদন লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।