সবুজ ইসলাম, রাজশাহী :
রাজশাহীর পবা উপজেলার ০৮নং বড়গাছি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের তালতলা মোড় থেকে ইটাঘাটি পযর্ন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়কের ভাঙন চরম পযার্য়ে । স্থানীয়দের কাছে থেকে জানা যায় এই রাস্তায় শেষ সংস্কার কাজ হয়েছিল ২০১৭ সালে। দীর্ঘ সাতটি বছর পার হয়ে গেলেও এই রাস্তায় লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। মথুরা, ছোট আমগাছি , বড় আমগাছি, ইটাঘাটি সহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় দশ থেকে বারো হাজার মানুষের চলাচল হয়ে থাকে এই রাস্তা দিয়ে। রাস্তাটিতে প্রবেশের মুখে মথুরা ছোট ব্রীজের সামনে রাস্তায় কয়েকটি বড় গর্ত দেখা যায়। যা যেকোন সময়ে দূর্ঘটনার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। স্থানীয়রা জানান এই রাস্তায় কয়েকবার অটো ভ্যান গাড়ি উল্টে গিয়েছিল এবং ট্রাক বা বড় বড় গাড়ি এই রাস্তার ভাঙনের কারণে ঠুকতে চায় না। মথুরা মোড় থেকে বড় আমগাছি রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে রাস্তায় ইটের গুড়ি বের হয়ে গেছে । কোথাও কোথাও আবার রাস্তার অর্ধেক অংশ বসে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে যা সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে।
মথুর গ্রামের মিলন আলী নামের এক বাসিন্দার সাথে কথা বললে তিনি রাস্তাটিতে দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অন্যন্য এলাকায় দেখি দুএক বছরের ভিতরেই রাস্তার নতুন করে কাজ হয়। কিন্তু আমরা এমনই এক অভাগা নাগরিক যে আমাদের এই রাস্তাটি ৬-৭ বছর হলো এখন পর্যন্ত একটু ঠিক হলো না। আপনেরা রাস্তাটিতে ঘুরলেই দেখতে পাবেন রাস্তার কি অবস্থা । আমার মনে হয় আমাদের এই রাস্তার মত খারাপ অবস্থা রাজশাহীর আর কোন রাস্তার আছে”।
একই এলাকার চামেলী বেগম নামের এক বাসিন্দার সাথে রাস্তার বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, “ভাই আমরা তো হলাম সাধারণ জনগন। যেই আসে সেই আমাদের সাথে খেলে। কাকে আর কি বলবো? পাঁচ বছর আগে থেকে সবাই বলে রাস্তার কাজ নাকি আরো কয়েকদিন পরেই শুরু হবে। সেখানে ছয় সাত বছর হয়ে গেলো কিন্তু আমাদের রাস্তার কাজ তো শুরু হলো না। আর হবে কবে?
এই অন্চলের মানুষেরা অনেকাংশে কৃষির সাথে জড়িত। জমিতে উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে গেলে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। কৃষকেরা জানান তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করতে গেলে ভাঙা রাস্তার কারণে পরিবহণ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। রাস্তার ভাঙা থাকার কারণে ভ্যান থেকে শুরু করে ভূটভুটি গাড়ি এই রাস্তায় আসতে চায় না। বড় আমগাছি গ্রামের রাব্বি আলী নামের এক কৃষক রাস্তার নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা কৃষক মানুষ ভাই। আমরা তো সরকারের কাছে থেকে তেমন কিছু চাই না। আমাদের যাতাযাতের জন্য সামান্য রাস্তাই যদি ৭ বছর থেকে ভাঙ্ াথাকে তাহলে আমরা চলাচল করবো কিভাবে। তাই আমাদের সকলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি আমাদের এই রাস্তাটি অতিদ্রুত সময়ের ভিতরে করা হয়”।
একই এলাকার সোহান আলী নামের এক কৃষক বলেন, “আর মাত্র কয়েকদিনের ভিতরেই বিল থেকে আলু উঠবে। আলু উঠলে ট্রলি,ট্রাক , ভূটভুটি এই রাস্তায় চলাচল করবে। এখন রাস্তায় ভাঙনের যেই অবস্থা তাতে এগুলো যান এই রাস্তা দিয়ে চললে উল্টে যাবে। রাস্তায় যেই অবস্থা, অর্ধেক রাস্তায় ভাঙা। আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন রাস্তার কার্পেটিং উঠে নিচের ইট বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও আবার রাস্তার ইট সরে গিয়ে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি আপনাদের সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কাছে বলতে চাই আমাদরে এই রাস্তাটি যেন আলু উঠানোর আগেই কাজ শুরু হয়। রাস্তা ভালো হলে আমাদের কৃষকদের সবচেয়ে বেশি সহ এলাকাবাসীর উপকার হবে”।
রাস্তা নিমার্ণের কথা জানতে চাইলে অত্র ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার রকিবুল ইসলাম রকি জানান, “এই রাস্তাটি নির্মাণের জন্য উপজেলায় আবেদন দেওয়া হয়েছে। সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন তার ডিও লেটারের মাধ্যমে এই রাস্তা নির্মাণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তবে এগুলো আবেদন দেওয়া অনেকদিনই তো হলো। এখন এই রাস্তার কাজ কবে শুরু হবে তা আমি এই মুহুর্তে বলতে পারছি না”।
একই বিষয় জানতে চাওয়া হলে বড়গাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসাইন সাগর মুঠোফোনে বলেন, “উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে রাস্তার মাপ নিয়ে গেছে এবং রাস্তার ট্রেন্ডারও হয়ে গেছে। আশা করছি খুব অল্প সময়ের ভিতরেই এই রাস্তার কাজ শুরু হবে। ইউনিয়নের অনেক রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। এই রাস্তার কাজটি হয়ে গেলে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘব হবে”।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL