নিজস্ব প্রতিনিধি
বগুড়া ব্যুরো :
বগুড়ার নন্দীগ্রামে একটি কলেজের বহিস্কৃত শিক্ষককে মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। বিধি বহির্ভূতভাবে কলেজে অধ্যক্ষসহ তিন পদে নিয়োগে অর্ধকোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ এনে গভর্ণিং বডির সভাপতি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুল হাসান সবুজ ও সদ্য যোগদান করা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশিদ তোতা মিয়ার অপসারণ দাবি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নন্দীগ্রাম পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডের বঙ্গবন্ধু চত্বরের সামনে সচেতন নাগরিক ও পৌর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ব্যানারে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। বক্তারা বলেন, মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত মাহবুবুর রশিদ তোতা বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে থানায় দায়েরকৃত নাশকতা মামলার আসামি। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সিহালীর পীরব ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ থেকে মাহবুবুর রশিদকে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই ব্যক্তিকে মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে বিধি বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গভর্ণিং বডির সভাপতি সবজু সবকিছু জেনেও মোটাঅংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বহিস্কৃত শিক্ষককে অধ্যক্ষ পদে বসিয়েছেন। সদ্য যোগদান করা অধ্যক্ষ ও গভণিং বডির অবৈধ সভাপতি সবুজের অপসারণসহ তিন পদে অর্ধকোটি টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের ব্যাপারে তদন্ত দাবি করেন বক্তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আয়নাল হক, দুলাল হোসেন, শাহিনুর রহমান, হযরত আলী, রাশেদুল ইসলাম লিটন, ফজলুর রহমান, ফারুক হোসেন, ওসমান মোল্লা, শাহাদত হোসেন মিঠু, রুবেল হোসেন, এরফান আলী, আজমীর হোসেন প্রমুখ।
প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, কলেজে সদ্য যোগদান করা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রশিদ তোতা মিয়া ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রচারণাকালে গাড়িবহরে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। তিনি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে নন্দীগ্রাম থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামি। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মাহবুবুর রশিদ শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অধিভূক্ত ওই প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ, চাকরি বিধি ভঙ্গ করাসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে মাহবুবুর রশিদ সাময়িক বরখাস্ত হন।
পীরব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসিমা আকতার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর পীরব কলেজেও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের আবেদন করেছিলেন। একারণে প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করা হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত চিঠিতে মাহবুবুর রশিদের টাকা আত্মসাৎ করাসহ অনিয়মের ব্যাপারে অবহিত করা হয়।
এদিকে কলেজ সংশ্লিষ্টরা জানান, মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজে একবছরের জায়গায় আড়াই বছর ধরে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন মঞ্জুয়ারা খাতুন। তার সঙ্গে গোপনে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কৌশলে গভর্ণিং বডির সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সবুজ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গত ৫ অক্টোবর বগুড়ার আদালতে মামলা দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎসাহী সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহসীন আলী।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL