২৩-নভেম্বর-২০২৪
২৩-নভেম্বর-২০২৪
Logo
শিক্ষা

এসএসসি পরীক্ষা শুরু আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিতঃ ২০২২-০৯-১৫ ১৮:৫৬:৪১
...

সারা দেশে ২০২২ সালের এসএসসি-সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার।  দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় এবার এ পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।  যানজট এড়াতে এবছর সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এদিকে পরীক্ষা চলার সময় কেন্দ্রগুলোয় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।  এ নিষেধাজ্ঞায় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  এ আদেশ থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনগুলোয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। 

এবার দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় মোট ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।  সারাদেশে তিন হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে মোট ২৯ হাজার ৫৯১টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।  তার মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডের আওতায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন, দাখিলে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন।  মাদ্রাসা বোর্ডের আওতায় দাখিল পরীক্ষায় দুই লাখ ৬৮ হাজার পরীক্ষার্থীর জন্য ৭১৫টি কেন্দ্রে নয় হাজার ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী রয়েছে।  এছাড়া কারিগরি বোর্ডের আওতায় এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। মোট ৮২৮টি কেন্দ্রে দুই হাজার ৮১৮টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে।  এছাড়া দেশের বাইরে আটটি দেশে ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।  

২০২১ সালের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থী কমেছে দুই লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন।  মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৫৫৬টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১১১টি।  বৈশ্বিক অতিমারির কারণে পরীক্ষার বিষয়, নম্বর ও সময় কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। 

এসএসসি-সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু, প্রশ্নফাঁসের গুজবমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্ন করতে গত ৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে যানজট এড়াতে এসএসসি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত করা হয়েছে।  এতে সবার সুবিধা হবে।  

পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টা থেকে কমিয়ে দুই ঘণ্টা করা হয়েছে।  এরমধ্যে এমসিকিউ ২০ মিনিট এবং সিকিউ এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট।  এ বছর এসএসসিতে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে না।  

 

এসএসসিতে বিভাগভেদে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা, সংগীত, আরবি, সংস্কৃতি, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, চারু ও কারুকলা, পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ, ভূগোল ও পরিবেশ, উচ্চতর গণিত, হিসাববিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি বিষয়ে পরীক্ষা হবে।  

পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।  কেউ দেরি করলে তার কারণ গেটে রেজিস্ট্রার খাতায় উল্লেখ করে প্রবেশ করতে দিতে হবে।  সে তথ্য পরীক্ষা শেষে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে।  

পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।  শুধু কেন্দ্র সচিব বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।  পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।  প্রতিটি কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। 

পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে।  সে অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কেন্দ্র সচিব ও পুলিশ কর্মকর্তার সইয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলবেন।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান পাবলিক পরীক্ষায় বে-আইনি কোনো কাজ করলে সে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হবে।  দোষী শিক্ষক ও কর্মচারীদের (সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলে) চাকরি থেকে  সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের এমপিওভুক্তি বাতিল করাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসি প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।  এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হবে।  

অন্যদিকে প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিটসহ শিক্ষক বা অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।  পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী ।