নিজস্ব প্রতিবেদক
আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুইমাস বর্ষাকাল। এ ঋতুতে তুলনামূলকভাবে বেশী বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু আবহাওয়ার পরিবর্তন আর প্রকৃতির বিরুপ আচরণই জানান দিচ্ছে ঋতুচক্র বর্ষপুঞ্জিতে আটকে পড়েছে। বর্ষার কড়া রোদে দেখা মেলেনি বৃষ্টি। চলছে তীব্র খরা আর অতিরিক্ত গরম। এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে নতুন নিয়মে লোডশেডিং। সব মিলিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলাবাসী। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে লোডশেডিং এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলাবাসীরা চার্জার ফ্যান ও লাইট কিনতে দোকানে ছুটছে। এমন সুযোগে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। চার্জার ফ্যান প্রতি বেড়েছে ৫শ থেকে ৭ শ টাকা আর চার্জার লাইট ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা।
পৌর শহরের সড়ক বাজার এলাকায় বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকানে ঘুরে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
গত দুই সাপ্তাহ আগে যে চার্জার ফ্যান ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকায়। আর ১ হাজার টাকার চার্জার লাইট এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩শ টাকায়। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।
জ্বালানি সাশ্রয়ে ১৯ জুলাই থেকে সারাদেশে শিডিউল অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ অবস্থার ফলে পৌর শহরসহ উপজেলায় ও শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং শুরু হয়েছে।
ওইসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানায়, সরবরাহ কম থাকায় পাইকারী বাজারে অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে। তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করছি, এ অবস্থা থাকবে না কিছুদিনের মধ্যে তা কমে আসবে।
সড়ক বাজার কর্নফুলী ইলেকট্রনিকসের মালিক মো. হাসেন মিয়া জানান, সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে চার্জার লাইটসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্সের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যে চার্জার ফ্যান পাইকারিকে ২৩ শ টাকায় কিনে আনা হতো এখন তা কিনে আনতে হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। পাশাপাশি যে চার্জ লাইট ১হাজার টাকার কেনা হতো এখন তা কেনা হচ্ছে ১২টাকায়। তিনি বলেন পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির ফলে আমাদেরকেও বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায় আমাদের পুঁজি বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের লাভ বাড়েনি । তবে লোডশেডিংয়ের কারণে কয়েকদিন ধরে চার্জার ফ্যান ও লাইট বিক্রি বেড়েছে।
দোকানী মো. মিলন মিয়া বলেন, গত দুই সপ্তাহে আগে যে চার্জার ফ্যান ২৪০০ টাকায় কেনা হয়েছে। এখন ওই ফ্যান কিনতে হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকা বেশী দিয়ে। পাশাপাশি চার্জার লাইটেরও দাম বেড়েছে। সরকারের নতুন নিয়মে লোডশেডিং দেওয়ায় সব ধরনের ইলেকট্রনিক্সে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আসলে এখানে আমাদের দাম বৃদ্ধি অথবা কমানোর কোনো কিছু নেই।
চার্জার ফ্যান কিনতে আসা পৌর শহরের তারাগন এলাকার কামরুল হাসান বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে খুব গরম চলছে। আবার সেই সাথে লোডশেডিংও বেড়েছে। এ অবস্থায় ঘরে থাকা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে বাজারে আসা। তিনি বলেন, যে চার্জার ফ্যান ২৩শ টাকায় বিক্রি হতো এখন ওই ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়।
এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩২শ থেকে ৩৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, এখন পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL