নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা :
সুন্দরবন উপকুলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে উকুলীয় বেঁড়ীবাঁধ রক্ষায় মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। ১ হাজার ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যায়ে গাবুরায় উপকুলীয় টেকসহ বেঁড়ীবাঁধ রক্ষায় বসানো হচ্ছে কংক্রিটের সিসি ব্লক।ঝড় জ¦লস্বাচ্ছে নি:শ^ হওয়া মানুষ এখন নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখছে।এ অঞ্চলের মানুষের চোখে মুখে নতুন করে বসত ভিটেতে টিকে থাকার আশা ফিরে পেয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে (২০ ফেব্রয়ারী) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির সরেজমিন গাবুরায় বেঁড়ী বাঁধের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি উন্নয়ন কাজ তদারকি করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পাশোপাশি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, সুন্দরবন উপকুলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা। চারিদিকে নদী বেষ্টিত এ ইউনিয়নের মানুষ ঝড় জলোচ্ছাস সহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে লড়াই করে টিকে আছে সেই যুগযুগ ধরে। ৩৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের উপকুলীয় গাবুরা ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামে ৩৮ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে। এখানকার মানুষ সুন্দরবনের প্রকৃতিক সম্পদ আহরনের পাশাপাশি মৎস চাষ ও কৃষি কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করে। তিনি বলেন টেকসই বাঁধ নির্মান করায় এলাকার মানুষ দারুন খুশি। ক্রক্রিটের এ বেড়ীবাধ নির্মান কা শেষ হলে এখানে পর্যটনের সম্ববনার দুয়ার খুলে যাবে। দুর দুরান্ত থেকে এখানে পর্যাটকরা ছুটে আসবে। এর ফলে এলাকায় আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, প্রলয়ংকারী ঘূণিঝড় আইলা, সিডর, বুলবুল,আম্পান,ফনী ও ইয়াস এর মত প্রাকৃতিক দূর্যোগের আঘাতে বেঁরিবাধ ভেঙ্গে এ ইউনিয়নে বহু মানুষের প্রানহাণীসহ ফসলী জমি, মাছের ঘেরে আর্থিক ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে বহুবার। ক্ষয়ক্ষতির ফলে গাবুরায় ইউনিয়ন জুড়ে সৃষ্টি হত মানবিক পরিস্থিতির। জন্মস্থানের বসত-বাড়ি ফেলে যেতে হত অন্য জায়গায়। উদ্বাস্তুর মতন জীবন-যাপন করতে হত এ অঞ্চলের মানুষের এমন কথা জানিয়েছে উপকুলের মানুষ।
সাতক্ষীরা পানিউন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সালাউদ্দীন জানান, ভবিষ্যতে এসব প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্দোগে ইউনিয়নের চারি পাশে টেকসহ বেড়ীবাধ নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকার গাবুরা ইউনিয়নে চারিপাশে সাড়ে ২৯ কিলোমিটার টেকসহ বাঁধ নির্মানে ১ হাজার ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেন।
গাবুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স ম শফিউল আযম লেনিন জানান, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড -১ এর অধিনে টেকসই বেড়িবাধ নির্মান কাজ আরও ৪ মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে। এ স্থায়ী বেড়িবাধ নির্মান কাজ দৃশমান হওয়ায় সহায় সম্পদ হারানো মানুষের মুখে দেখা মিলেছে স্বস্তি এবং আনন্দের হাসি।
বালি ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলে নদী ভাঙ্গন রক্ষা, পাথর, বালি এবং সিমেন্ট জমিয়ে সিসি ব্লক তৈরি করে বেড়িবাঁধের নদীর পাশে বসিয়ে নির্মান করা হচ্ছে কংক্রিটের টেকসই বেরিবাঁধ। বাঁধ নির্মানে যেন চলছে এক মহা কর্মযজ্ঞ।
সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর এলাকার সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার জানান,এ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান কাজ সম্পূর্ন হলে প্রাকৃতিক দূর্যোগে দ্বীপ ইউনিয়নের মানুষের জান, মাল ফসলী জমি, মাছের ঘেরের ক্ষতি হবেনা ছাড়তে হবে না জন্মস্থানের বসত-বাড়ি। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুন্দরবন উপকুলীয় গাবুরা ইউনিয়নে মানুষের রক্ষায় টেকসহ এ বেড়িবাধ নির্মান করে দিচ্ছেন। উপকুলের মানুষ সরকারের প্রতিকৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান,টেকসই বেড়িবাঁধের কাজ সম্পূর্ন হলে গাবুরা ইউনিয়ন ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে সুরক্ষা পাবে উপকুলের মানুষ। মানুষের অর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সহ সুন্দরবনে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উপকুলীয় বেড়ীবাঁধে সুন্দর দৃষ্টি নন্দন হচ্ছে এসব কর্মযজ্ঞ দেখে মানুষের মাঝে স্বস্তির হাসি দেখা দিয়েছে।
গাবুরা গ্রামের মাষ্টার আব্দুর রহিম জানান, একাধিক দূর্যোগের সময় উপকুলের মানুষদের নিরাপদে রাখতে দ্বীপ ইউনয়ন গাবুরার চারি পাশে সাড়ে ২৯ কিলোমিটার টেকসই ভেরিবাধ নির্মান যজ্ঞ দেখে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে। কখনো বশ^াস করিনি আমাদের রক্ষায় সরকার ক্রক্রিটের বাঁধ নির্মান করবে। টেকসই বেঁড়ী বাধ নির্মান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ ও তার সু-স্বাস্থ্য এবং র্দীঘায়ূ কামানো করেছে সুন্দরবন উপকুলের মানুষ।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL