সাইফুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ):
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গভীর রাতে হামলা চালিয়ে ভেক্যু দিয়ে কয়েকটি বসতবাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন । এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ীর মালিক গফুর কোম্পানী বাদী হয়ে আওসী বেগম গংদের বিরুদ্ধে সিংগাইর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ।
হামলাকারীরা প্রথমে আবুল বাশার বাহেরের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তাকে ও তার ছেলে মো. আরিফ হোসেন (৩৩)৷ কে গুরুতর জখম করে। তারা দুই জনই আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাশের বাড়ীর মালিক গফুর কোম্পানি জানান, ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পাঁচ মিনিট পর পুলিশ চলে গেলে, দূর্বৃত্তরা আবারও বসত বাড়ী ভাংচুর শুরু করেন। রাত ১ টা হতে ৩ টা পর্যন্ত এ তান্ডব লীলা চলতে থাকে। এঘটনায় আশ পাশের লোকজন ভয়ে নিরুপমা ও আতংক হয়ে পড়েন । বুধবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ভাংচুর ও সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আবুল বাশার বাহেরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে খাবার খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১ টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আব্দুর রাজ্জাক (৭০)ও মো. হাসেম (৪৫) , জসিম (৩২), মো. রাজিব (১৮), ভাটিরচর গ্রামের সিরাজুল (৪৫), কামরুল (১৯) অজ্ঞাত ৬০-৭০ জন অস্ত্রধারী লোকজন প্রথমে বাহেরের ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এর পর তাকে মাথায় কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে । শব্দ পেয়ে পাশের ঘর থেকে ছেলে আরিফ বের হলে তাকেও বেধম মারধর করে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়। এছাড়া ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও প্রয়োজনীয় দলিলপত্রসহ গুরত্বপূর্ণ সব মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে ভুক্তভোগীরা দাবী করেন। এরপরই দূর্বৃত্তরা বাহেরের বিক্রিকৃত আব্দুল গফুর কোম্পানির সেমি পাকা বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল ও ভাড়াটিয়া ১০ টি কক্ষ ভেক্যুদিয়ে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয়৷। ঐ বাড়ীতে থাকা ভাড়াটিয়াদের ব্যবহৃত মূল্যবান আসবাব পত্র ভেঙেচুরে তছনছ করে ফেলে দূর্বৃত্তরা । ঐরাতে ই পাশের মো.জাকির হোসেনের মালিকানাধীন শাহজালাল কেইন ফার্ণিচার কারখানা ভাংচুর করে ল্যাপটপ, কর্মচারিদের মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন হামলাকারীরা।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনায় দু’দফায় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও কোন পদক্ষেপ না নিয়ে পিছু হটে। বাহের ও আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী আউসি বেগমের (৭০) কাছে বিক্রি করা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। হামলাকারীদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন।
এ প্রসঙ্গে ধল্লা পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই মো. রফিকুল ইসলাম প্রথমে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পরে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি, তবে দেয়াল ভাঙ্গা ও একটি ভেকু দেখে ওসি স্যারকে জানাই। তিনি আমাকে জরুরী পার্টি পাঠানোর কথা বলে চলে যেতে বলেন।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং রাতেই দুজনকে আটক করা হয়।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL