২১-নভেম্বর-২০২৪
২১-নভেম্বর-২০২৪
Logo
ময়মনসিংহ

৫৩ বছরেও গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে নেই উন্নয়নের ছোঁয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-০৬ ১১:৪২:৩৫
...

মোঃ আল ইমরান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) :
গৌরীপুর উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনটি ১৯৭০ সালে নির্মিত হয়। নেত্রকোনা জেলার মানুষ ও গৌরীপুর উপজেলার মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হলো রেলওয়ে যাতায়ত ব্যবস্হা। বর্তমানে ১০ জোড়া ট্রেন গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন হয়ে পূর্বধলার জারিয়া ও নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে চলাচল করে। দিন দিন এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে রেলওয়ে যাতায়াত ব্যবস্হা। সারাদেশ ব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নয়ন হলেও শুধু উন্নয়নের ছোঁয়া নেই গৌরীপুরের রেলপথ বিভাগে। গৌরীপুরের ট্রেন যাতায়াত ব্যবস্হাও ভাল না। গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে মোট পাঁচটি রেল লাইনের মধ্যেই ৩টি সচল বাকী ২টি অচল। যেখানে প্রতিদিন ১০ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। লাইন নষ্ট থাকার কারণে অনেক ট্রেন স্টেশনের আউট লাইনে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়। ফলে যাত্রীগণ অনেক ভোগান্তির শিকার হয়। স্টেশনের ফুটওয়ার ব্রীজটিও ভাঙ্গা। অন্যদিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় স্টেশনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। জনগণের অসচেতনতা, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই এমনটা হচ্ছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

ভৌগলিক দিক দিয়ে এই স্টেশন আলাদা গুরুত্ব বহন করে। ব্রিটিশ আমলেই গৌরীপুর রেলস্টেশন স্থাপিত হয়। ট্রেন যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে জারিয়া-ঝানজাইল-পূর্বধলা, মোহনগঞ্জ- নেত্রকোনা -শ্যামগঞ্জ-গৌরীপুর-ময়মনসিংহ লোকাল ট্রেনসহ ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন ১০ বার চলাচল করে। অসংখ্য মানুষ তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সকাল সন্ধ্যা হাটাহাটি করে। কিন্তুু বর্তমানে এই স্টেশনে কেউ আসলে তাকে ময়লার দুর্গন্ধে নাক ঢেকে আসতে হয় আর জনগণ যখন তখন, যেখানে সেখানে মুত্রত্যাগ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ময়লা স্তুপ করে রাখায় স্টেশনটির সামনে এবং পিছনের জায়গা ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। স্টেশনের পরিত্যক্ত বিল্ডিং আর রেললাইনের ধার দিয়ে মানুষ অনবরত মুত্রত্যাগ করে আসছে। দখল-দূষণ ছাড়াও নানা সঙ্কটে ধুঁকছে এই রেলপথ।

স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীগণ বলেন, স্টেশন বাজারে প্রতিদিন প্রায় শত শত মানুষ এই বাজারে যাতায়াত করে। কিন্তু এই বাজারে বাথরুম নেই, আর স্টেশনে এনজিও দাতা সংস্থার গণশৌচাগার ছিল ১ টি তাও ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। এজন্যই লোক লজ্জার মাথা খেয়ে লোকজন স্টেশনে খোলা জায়গায় প্রস্রাব ও পায়খানা করতে আসে।

গৌরীপুর রেলস্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, স্টেশনে ময়লা না ফেলতে এবং ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও রেললাইনের ইলেকট্রিক অনেক বাতি নষ্ট থাকায় প্রায় সময় চুরি ছিনতাইয়ের দু্র্ঘটনা ঘটে।
স্হানীয় বাসী অভিযোগ করে বলেন, ঈদ সহ বিভিন্ন সময় কালো বাজারীদের মাধ্যমে টিকেট বেশি দামে ক্রয় করতে হয়,এর জন্য স্টেশন মাস্টার সহ রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা দায়ী।

গৌরীপুর স্টেশনের স্হানীয় বাসিন্দা আবদুর রউফ দুদু, সাবেক কাউন্সিলর আবদুল কাদিরসহ স্হানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দেশের উন্নয়ন হলেও গৌরীপুরের পূর্বের এমপি মন্ত্রীগণ কখনো গৌরীপুর উন্নয়ন করেনি। তারা গৌরীপুরের উন্নয়নের পরিবর্তে শুধু নিজেদের উন্নয়ন করেছে।

এ বিষয়ে গৌরীপুরের নবনির্বাচিত এমপি এ্যাডভোকেট নিলুফার আনজুম পপি বলেন, গৌরীপুর উপজেলাকে অচিরেই একটি স্মার্ট উপজেলা হিসাবে গড়ে তুলা হবে। পাশাপাশি সকল রাস্তাঘাটসহ জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অচিরেই দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।