নিজস্ব প্রতিনিধি
হামিদুর রহমান হামিদ, রংপুর ব্যুরো :
রংপুরে ক্রমগতভাবে বেড়েই চলছে দাদন ব্যবসা। অপর দিকে সমবায় এবং সমাজসেবার অধিদপ্তরের ভূমিকা রহস্য জনক । গত কয়েকদিনে স্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় এই ভোগ্যপন্য সমবায় সমিতির নামে সংবাদ প্রকাশিত হলে নিজেকে নির্দোশ প্রমান করার জন্য রংপুরের স্থানীয় সকালের বাণী পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের নামে প্রতিবাদ ছাপিয়ে সাধারণ মানুষকে হতবাক করে দিয়েছে।
অপর দিকে ভুক্তভোগীরা রংপুরের ৮ টি উপজেলার একটি সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ টি ওয়ার্ডে দাদন ব্যবসা বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সমাজসেবা ও সমবায় কর্মকর্তাদের ঘুষ গ্রহণের রাস্তা প্রশারিত হচ্ছে। এমনকি রংপুরে মডেল মাল্টিপারপাস সোসাইটি লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী আহসানুল হকের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ দাখিল হলেও কোন ক্রমেই ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না সংশ্লিষ্ট দপ্তর। শিখা ভোগ্যপন্য সমবায় সমিতির নির্যাতনের কবলে দিশেহারা হয়ে পড়ছে ভুক্তভোগী জনগণ।
এ ঘটনায় ওলিউল্যাহ নামে একজনকে উকিল নোটিশ পাঠায় এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করছে দাদন ব্যবসায়ি । তাই এলাকার সচেতন নাগরিকরা এই সুদ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ মূলক আন্দোলন করার জন্য আহবান করেছেন। ওলিউল্যাহ নামে একজন ভুক্তভোগী ঋনগ্রস্থ পরিবার । দিন দিন বেড়েই চলছে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ বলপুর্বক আদায় সংক্রান্ত নানা অভিযোগের।হয়তো কখনো তা থেকে যায় লোক চক্ষুর আড়ালে বা কখনো নির্ভুতে কান্দে অসহায় সেই ঋণগ্রস্থ পরিবারের মাঝে। অথবা মাসের পর মাস বিভিন্ন সরকারী সংস্থায় ধর্না দিয়েও পাওয়া যায় না এর প্রতিকার।
প্রতিবাদ করলেও হয় নানান সমস্যা এমন কি জীবন নাশের হুমকি।এমন ঘটনা ঘটেছে, নগরীর দর্শনা এলাকার ১৫ নং ওয়ার্ডের আক্কেলপুর গ্রামের ছোট মুদি দোকানী রশিদুল হকের সাথে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়ে।সরজমিনে কথা হয় ভুক্তভোগী রশিদুল হকের সাথে তিনি জানান, ৩১ ডিসেম্বর ২২ইং সালে করোনার পর গরীব মানুষ যখন সর্বশান্ত ঠিক তখনেই টার্গেট নেয় এই সমিতির লোকজন আক্কেলপুরে। চড়া সুদে ঋণের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রামের সহজ সরল মানুষকে নানা কৌশলে ফেলিয়ে তাঁদেরকেও নাজেহাল করেছে বলে জানান রশিদুল হক।তিনি আরো বলেন, শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নেওয়ার পর তা সুদসহ পরিশোধের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পরেন তিনি মহাবিপদে।
তাঁর সেই ছোট মুদি দোকানটি রাস্তার প্রশস্ত৷ করন কাজের কারনে দোকান সরিয়ে অন্যত্রে নেওয়ার কাজের জন্য কিস্তির টাকা দিতে অপরাগ হইলেই বিপদ নেমে আসে রশিদুলের জীবনে। শুরু হয় একের পর এক সুপার ভাইজারদের আনাগোনা। ভয়ভীতি এমনকি জীবন নাশের হুমকি।জানুয়ারি ২৪ইং তথাকথিত অলিউল্লাহ নামে একজন লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় আমার বিরুদ্ধে। সেখানে উল্লেখ আছে আমি চেক মারফত তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ ধার নিয়েছি সেই টাকা ৩ মাসের মধ্যে না দিলে আমাকে জেলের ভাত খাওয়াবে। যে চেকটি নিয়েছিল ঋণ নেওয়ার পুর্বে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি আমার কাছ থেকে। যার নম্বর ১১৮২ ৩২৫৩০৫৪ হিসাব নং০২০০০১২৮১৬৫৪২।পরে ভয়ে আমি আমার বাড়ীর হাঁসমুরগি বিক্রি করে সমিতিতে সমুদয় অর্থ পরিশোধ করার পরেও তাঁরা আমার কাছে উকিল খরচ নেয় আরো ৫ হাজার টাকা গ্রহন করে। তাই শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির এহেন কাজের জন্য আমি বিভিন্ন সরকারী সংস্থায় এ ব্যাপারে অভিযোগ পত্র দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে সমিতির ম্যানেজার মোসফেকুর রহমান সাহেদ বলেন, লিগ্যাল নোটিশ কে করেছেন তিনি জানতেন না। তিনি বলেন সমিতির নামে ৩ লাখ টাকার লিগ্যাল নোটিশ কেউ রশিদুল কে দেন নাই।বিষয়টি রংপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা বিসিএস (সমবায়) মোঃ আব্দুস সবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান দর্শনার মোড় এলাকার শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির নামে এমন অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করা হচ্ছে।তদন্তে প্রমানিত হলে সমবায় আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।যদি শিখা ভোগপন্য সমবায় সমিতি এরকম গ্রাহক হয়রানী বা ব্যাংকের মতো রীতিনিতি বা ফাঁকা ষ্ট্যাম্প জমা কিংবা গ্রাহকের আমানত বা ব্যাংকের ব্ল্যাঙ্ক চেক ঋণের বিপরীতে জমা নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিধিমালায় সমবায় সমিতিতে ব্যাংকের ফাঁকা চেক কিংবা স্ট্যাম্পের বিপরীতে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ হলেও থেমে নেই ব্যবসা। গ্রাহকদের অভিযোগ ঋণ গ্রহনে দিতে হয় ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর।নেওয়া হয় ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক।এনিয়ে চরম বিপাকে ঋণগ্রস্থ ভুক্তভোগী পরিবার গুলো। রংপুরে অধিকাংশ সমবায় সমিতিতে নেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণের নামে আমানত।পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকের নিয়মে সমবায় সমিতি। প্রতারনা ও জালিয়াতিসহ বলপুর্বক অভিযোগ উঠেছে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে।আর এরকম প্রতারণা রংপুর জেলা জুড়ে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL