তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত সফল এবং ফলপ্রসূ। এর মধ্যে সবচে বড় অর্জন হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যসহ বিনাশুল্কে পণ্য রপ্তানির করার সুযোগ, যেটির জন্য বহু বছর ধরে বাংলাদেশ চেষ্টা করে এসেছে।
'অথচ এই ভারত সফর নিয়ে বিএনপি নানা ধরণের কথা বলেছে, এখন নিশ্চয়ই চুপসে গেছে কিন্তু এরপরও আজকালের মধ্যে তারা আরো কিছু একটা বলবে' উল্লেখ করে তিনি বলেন, সফল ভারত সফর করে বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই।
মন্ত্রী আজ দুপুরে বন্দরনগরীতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়েজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণকালে দেয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে দৃঢ় হয়েছে। আমাদের সরকারই ভারতের কাছ থেকে সমস্ত কিছু আদায় করেছে। ১৯৭৪ সালে ছিটমহল চুক্তি হয়েছে। সেই ছিটমহল আমাদের অধিকারে চার দশকে কেউ আনতে পারেনি। তারা কোন্ দেশের নাগরিক সেটা বলতে পারতো না। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ছিটমহলগুলো আমাদের অধিকারে এনেছেন। সম্পর্ক যে ন্যায্যতা ভিত্তিক তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে, আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের সাথে মামলা করে সমুদ্রসীমা জয়লাভ করেছি। '
ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সেটি আরো নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'তার প্রমাণ হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া, মাদকসহ মাত্র বিশটি পণ্য ছাড়া সকল পণ্যে ভারত আমাদেরকে ট্যারিফ সুবিধা দিয়েছে। যেটি বিএনপি আদায় করতে পারে নাই। খালেদা জিয়া তো ভারতে গিয়ে আমাদের গঙ্গার পানি হিস্যার কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলেন। সেটিও আদায় করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।'
সারা দেশে আজ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি আশা-ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন তিন লাখ টাকা দেয়া হয়। একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে তাকে পঞ্চাশ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা অনুদান দেয়া হচ্ছে। করোনাকালে ভারত পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা নেপালসহ এই উপ-মহাদেশের কোনো দেশে সাংবাদিকদের করোনা সহায়তা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সরকার করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে চার হাজার সাংবাদিককে সহায়তা দিয়েছে, এখনও তা চলমান আছে। '
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা কখনো কে কোন্ দল বা মতের সেটি দেখি না। আমি দল করি, আমি দলীয় সরকারের মন্ত্রী, কিন্তু যখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করছি তখন সবাইকে দুই চোখে সমভাবে দেখার চেষ্টা করি, রাষ্ট্রের সাহায্য যেন সবাই পায়। যারা প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে পারলে কালকেই সরকার নামিয়ে দেয়, আমাদের বিরুদ্ধে গলা ফাটায়, তাদেরকেও আমরা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সহায়তা করেছি। কিন্তু মাঝে মধ্যে বিশ্ব পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা হয়। কিছু কিছু সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিশ্ব পরিস্থিতিকে আড়াল করে দেশের পরিস্থিতিটাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়, এটি নতুন কিছু নয়। পদ্মাসেতু যখন আমরা নির্মাণ শুরু করি তখনো বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। '
ড. হাছান চট্টগ্রামের ৩৬ জন সাংবাদিকের হাতে ৩৪ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL