নন্দীগ্রাম (বগুড়া) :
বগুড়ার নন্দীগ্রামে কাথম বেড়াগাড়ী সরিষাক্ষেত থেকে অজ্ঞাত অন্ত:সত্ত্বা তরুণীর লাশ উদ্ধারের একবছর পর সিংজানী মাঠের সরিষাক্ষেত থেকে অজ্ঞাত যুবকের (৪৫) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অর্ধগলিত হওয়ার কারণে এটি হত্যা নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু! সে ব্যাপারে ধারণা করতে পারছে না পুলিশ। এদিকে কাথম বেড়াগাড়ী সরিষাক্ষেত থেকে উদ্ধার তরুণীর লাশের পরিচয় ১৩ মাসেও মেলেনি। হত্যার রহস্যও উন্মোচন হয়নি। ফরিদপুরের এক নারী ওই তরুণীকে নিজের কন্যা দাবি করে লাশ নিয়ে গিয়ে দাফন করার পর তার নিখোঁজ কন্যা বাড়িতে ফিরেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। উদ্ধার হওয়া অন্ত:সত্ত্বা তরুণীর লাশের পরিচয় আজও অজানাই রয়ে গেল।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রাম উপজেলার সিংজানী মোড়ের পাশে গোয়ালিয়া মাঠে জনৈক মাহফুজের সরিষাক্ষেত থেকে এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। উপুর হয়ে থাকা মরদেহের পরনে ছিল লুঙ্গি ও জ্যাকেট।
থানার ওসি আজমগীর হোসাইন আজম জানান, জমিতে সরিষা কাটকে গিয়ে স্থানীয় লোকজন অর্ধগলিত লাশ দেখে খবর দেয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। যুবকের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে হত্যা বা মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।
সুত্রমতে, ২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারি উপজেলার কাথম বেড়াগাড়ী পূর্ব মাঠের জনৈক তোতা মিয়ার সরিষাক্ষেত থেকে অজ্ঞাত অন্ত:সত্ত্বা তরুণীর (১৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার হাতে মেহেদি দিয়ে 'বি+এস' লেখা ছিল। পরনে ছিল কালো রঙের বোরকা এবং বেগুনি রঙের ওড়না। লাশ উদ্ধারের ৬দিন পর ফরিদপুরের সদরপুর থানার ভাষাণচরের হেলালউদ্দিন খাঁর ডাঙ্গী এলাকার রাজমিস্ত্রি শাহিন খানের স্ত্রী নূর নাহার থানায় এসে ওই তরুণীকে নিজের কন্যা দাবি করে। তার কন্যা শারমিন আক্তার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল। শারমিন ভেবে মরদেহ নিয়ে গিয়ে ফরিদপুরে দাফন করা হয়। সম্পতি ফরিদপুরে নিখোঁজ শারমিন তার বাড়িতে ফিরেছে।
ফরিদপুরের সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন জানান, নিখোঁজ শারমিন ভেবে বগুড়া থেকে লাশ এনে ওই পরিবার দাফন করেছিল। ১৫দিন পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে একটি যৌনপল্লী থেকে শারমিনকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নন্দীগ্রাম থানার তৎকালীন ওসি আনোয়ার হোসেন জানিয়েছিলেন, ওই তরুণী ৫-৬ মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিল। হত্যারপূর্বে তাকে ধর্ষণ করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে না পারায় পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিলো না। ফরিদপুরের নূর নাহার থানায় এসে আলামত দেখে ওই তরুণীকে নিজের নিখোঁজ কন্যা বলে দাবি করেন। ডিএনএ টেস্ট করে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন থানার উপ-পরিদর্শক তারিকুল ইসলাম। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। ব্যস্ত আছেন জানিয়ে কল কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে সহকারি পুলিশ সুপার (নন্দীগ্রাম সার্কেল) মো. ওমর আলী বলেন, তরুণীর হত্যা মামলার বিষয়টি সিআইডি বলতে পারবে। সিংজানী গোয়ালিয়া মাঠের সরিষাক্ষেত থেকে উদ্ধার যুবকের মরদেহের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করছি। বর্তমানে এই ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL