বগুড়া ব্যুরো :
১৯৬৮ সালে যখন দেশে ডিপ টিউবওয়েল বসানো শুরু হয়, তখন সর্বোচ্চ ৫০ ফুট নিচে টিউবওয়েল বসিয়েই পানি পাওয়া যেত। এখন ১৬০ ফুট বসিয়েও পর্যাপ্ত পানি মিলছে না। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বগুড়া ধুনট উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে গ্রীষ্মের আগেই অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন। নিরুপায় মানুষ বাড়ি থেকে দূরের কৃষি মাঠে গিয়ে গভীর নলকূপ থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। ধুনট উপজেলার মথুরাপুর, চৌকিবাড়ি ও গোপালনগর ইউনিয়নের প্রায় ৬০ গ্রামে নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তিন ইউনিয়নের প্রায় ৭৫ শতাংশ নলকূপে চাহিদা অনুযায়ী পানি উঠছে না। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বলছে, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া এবং জলাশয় গুলো ভরাট হওয়ায় এই সমস্যা প্রকট হয়েছে।
গ্রীষ্মের তাপদাহ বাড়ার সাথে সাথে এই সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। আগে ভূগর্ভের ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীরতা থেকেই পাওয়া যেত পানি। কিন্ত প্রায় তিন দশক ধরে ক্রমেই পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এলাকাবাসী পানির চাহিদা মেটাতে কৃষি জমিতে স্থাপিত গভীর নলকূপের পানি সংগ্রহ করতে ধূরদূরান্তে ছুটছেন।
মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান আহম্মেদ জেমস মল্লিক বলেন, দূর্ভোগ লাঘবে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে সাধারণত পানির স্তর ২০ ফুটের নিচে নামলে হস্তচালিত নলকূপ থেকে পানি ওঠে না। যদি ২২ থেকে ২৩ ফুটের নিচে নেমে যায় তাহলে বাসাবাড়িতে মোটর (সাধারণ পাম্প) দিয়েও পানি তোলা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বিশাল জনগোষ্ঠী সুপেয় ও গৃহস্থালির কাজে পানির সংকটে ভুগছে। মসজিদের মুসল্লিরাও বিপাকে পড়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ধুনট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রোজিনা আকতার বলেন, দক্ষিনের তিন ইউনিয়নে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। বেশির ভাগ নলকূপে চাহিদা অনুযায়ী পানি উঠছে না। এলাকাভিত্তিতে এটা কমবেশি আছে। প্রচন্ড দাবদাহ, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া এবং জলাশয় গুলো ভরাট হওয়ায় এই সমস্যা প্রকট হয়েছে। পানির সমস্যা সমাধানে উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো কিছু কপি করা যাবে না
Website Design & Developed By BATL