২১-নভেম্বর-২০২৪
২১-নভেম্বর-২০২৪
Logo
রাজশাহী

রঙিন ফুলকপিতে বাজিমাতের আশা

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-১৫ ১৭:৩৬:৪৭
...

জে.আর.জামান, খানসামা (দিনাজপুর) :
প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে বাজিমাত করেছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষক আবুল কালাম আজাদ। নিজ জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল হওয়ার পথে তিনি। উৎপাদন শেষে বাজারে বিক্রি শুরু করছেন তিনি।
কৃষক আবুল কালাম আজাদ উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা। প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, খানসামা থেকে চৌরঙ্গী মূল সড়কের সিফনি ভাটা নামক জায়গায় থেকে কৃষক আবুল কালাম আজাদে ক্ষেতে তাকালেই নজরে পড়বে সবুজ পাতায় মোড়ানো ফুলকপি। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখলেই নজরে আসবে সবুজ পাতার মধ্যে সোনালী ফুলকপি। যেটি ইতিমধ্যেই ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে এই রঙিন ফুলকপি ক্ষেত পরিদর্শন করেন দিনাজপুর অঞ্চলের টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো: রাকিবুজ্জামান। এই সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুণ কুমার রায় ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পৃথ্বীরাজ রায়।

জানা যায়, সাদা ফুলকপির সঙ্গে সকলে পরিচিত হলেও খানসামা উপজেলায় এবারই প্রথম চাষ করা হয়েছে রঙিন ফুলকপির। ভ্যান্টেলিনা জাতের রঙিন ফুলকপি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন ও পুষ্টিগুণে ভরপুর রঙিন জাতের এই ফুলকপিগুলির দাম সাধারণ জাতের ফুলকপির চেয়ে বেশি। তবে দেখে মনে হতে পারে সাদা ফুলকপির ওপর রঙ দেয়া হয়েছে। মূলত সোনালী রঙের ফুলকপির চাষ হয়েছে এবার। নতুন জাতের ফুলকপি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ঐ কৃষকের ক্ষেতে ভিড় করছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, খানসামা উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ করা হচ্ছে এই রঙিন ফুলকপি। ২০২৩-২০২৪ বোরো মৌসুমে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ওই কৃষককে চারা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ফুলকপি চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ।
কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, গত কয়েকবছর ধরে নিয়মিত সাদা ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে আসছেন তিনি। রঙিন ফুলকপির এই জাতের কথা জানতে পেরে কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০ শতক নিজ জমিতে এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেন তিনি। আর তাতেই ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন এবং লাভবান হওয়ার আশা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, বিশ শতক জমিতে এই রঙিন ফুলকপি চাষাবাদ করতে তেমন কোনো রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশকের প্রয়োজন হয়নি। সব মিলিয়ে ৫-৭ হাজার টাকা খরচ করে ৩৮-৪০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, নতুন এই জাতের রঙিন ফুলকপি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে। সেই সাথে অল্প পুঁজিতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে। এইজন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ সার্বিক বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছে।

দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো: রাকিবুজ্জামান বলেন, পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পুষ্টি সমৃদ্ধ ও নিরাপদ সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এই জাত সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। এতে কৃষকরা যেমন লাভবান হবে তেমনি বাজারে পুষ্টি সমৃদ্ধ ও নিরাপদ সবজি পাবে ভোক্তারা।