২২-নভেম্বর-২০২৪
২২-নভেম্বর-২০২৪
Logo
রাজশাহী

শীতের শেষে বৃষ্টি, বগুড়ায় শঙ্কায় আলু ও সরিষা চাষিরা

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিতঃ ২০২৪-০২-২৬ ১৭:২০:৩৭
...

নজরুল ইসলাম দয়া, বগুড়া ব্যুরো :
মাঘের শীতের শেষে ফাল্গুন মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে আলু জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ফসল নষ্টের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। এর আগে শৈতপ্রবাহে আলুতে মড়ক লেগে চাষে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। বগুড়ায় আলু উত্তোলনের শেষ মুহুর্তে বৃষ্টির পানিতে জমিগুলো ভিজে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে লোকসানের শঙ্কায় আছেন চাষিরা। বাধ্য হয়ে অনেকেই আলু উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন। একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন সরিষা চাষিরা। গত শনিবার থেকে বৃষ্টির কারণে উত্তরের শস্যভান্ডার খ্যাত জেলা বগুড়ায় আলু ও সরিষা জমিতে পানি জমে যায়। প্রায় সব উপজেলায় থেমে থেকে বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে আলু ও সরিষার উৎপাদন খরচ ওঠানো নিয়ে যেমন সংশয় তৈরি হয়েছে, তেমনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টিপাত হলেও আলু জমিতে পানি জমেনি। আলু পচে যাওয়া নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কৃষকরা জানান, সব চাষিরা মাঠে থেকে আলু তুলতে ব্যস্ত। হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে জমিগুলো ভিজে যাওয়ায় আলুতে পচন ধরতে পারে। বাধ্য হয়েই অনেক কৃষক আলু উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে বগুড়া জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত শনিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ২৮ মিলিমিটার মাঝারি ধরণের ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরপর বৃষ্টিপাত হয়নি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার বগুড়ায় ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। যেখান থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ আলু উত্তোলন করেছেন কৃষকরা।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার সরাই গ্রামের আইয়ুব প্রামানিক বলেন, আমি দুই একদিনের মধ্যে আলু তুলে বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি হয়ে জমিতে পানি জমে যায়। এই পানি না শুকানো পর্যন্ত আলু উত্তোলন করতে পারবো না। পানি জমি যাওয়ার কারণে আলু পচে যেতে পারে। আলুগুলো আর সংরক্ষণও করতে পারবো না। নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল এলাকার কৃষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, তিনি একবিঘা সরিষা ও পাঁচ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। বৃষ্টির পানিতে জমি ভিজে যাওয়ায় মাঠের পাকা সরিষা নষ্ট হতে পারে। এ বছর সরিষা চাষে অতিরিক্ত খরচ হলেও ফলন কমেছে। কাহালু উপজেলার কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, তার আড়াই বিঘা জমির স্টিক জাতের আলু তোলার সময় হয়ে গেছে। বৃষ্টিপাতে সাময়িক সমস্যা হয়েছে। এর আগে শৈতপ্রবাহে আলুতে মড়ক লেগে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে। এবার হঠাৎ বৃষ্টি দেখে প্রথমে ভয় লেগেছিল। কিন্তু মাটি সব পানি টেনে নিয়েছে। পানি জমে থাকলে আলুর ক্ষতি হতো। শিবগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর নয়াপাড়ার আলু চাষি আজমল হোসেন বলেন, অনেক কৃষক আগেই আলু তুলে জমিতে ধানের আবাদ করছেন। তাদের জন্য বৃষ্টি খুবই দরকার। আমাদের এখানকার মাটিতে পানি জমে না। তবে বৃষ্টি স্থায়ী হলে আলুর জন্য খারাপ হতো।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের কৃষক এমদাদ হোসেন বলেন, প্রতি বছর তিন বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করি। আলু সোমবার উত্তোলনের কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় আরও এক বা দুই দিন মাঠে রাখবো। দুপচাঁচিয়া উপজেলার বেশিরভাগ এলাকার মাটি দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ হওয়ায় বৃষ্টির পানি মাটিতেই শুকিয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতলুবর রহমান জানান, জেলার সব এলাকায় একই সমান অনুপাতে বৃষ্টিপাত হয়নি। জমিতে পানি না জমলে আলুর ক্ষতি হবে না।